প্রতীকী ছবি।
আদালতকক্ষের পাশের ঘরের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে ছোটা ভীম থেকে নানা ধরনের কার্টুন। রয়েছে বার্বি, ফুটবল-সহ হরেক রকমের খেলনা। একটি নির্যাতিত শিশু যাতে নির্ভয়ে সত্যি ঘটনার কথা খুলে বলতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই খেলাঘরের এমন অভিনব ব্যবস্থা-সহ শিশুবান্ধব পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আদালতের উদ্বোধন হল শুক্রবার। ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুক্রবার দুপুরে হাওড়া আদালতে এই কক্ষের উদ্বোধন করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন। হাওড়ায় ফিতে কেটে সেই কক্ষের দ্বারোদ্ঘাটন করলেন জেলা বিচারক শম্পা দত্ত (পাল)। উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার তনুশ্রী দত্ত-সহ হাওড়া আদালতের ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী ও বিশিষ্ট আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়া মহকুমা এবং হাওড়া জেলা আদালতে আগেও শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতনের বিচারের এজলাস ছিল। তবে শিশুদের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ পৃথক একটি আদালতকক্ষ জেলায় এই প্রথম হল। এর ফলে বিচারপ্রার্থীরা অনেকাংশে উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত পদস্থ কর্তারা।
এ দিন ওই কক্ষের উদ্বোধনের পরে হাওড়ার জেলা বিচারক বলেন, ‘‘শিশুরা যাতে খোলাখুলি এবং নির্ভয়ে শুনানির মুখোমুখি হতে পারে, তার জন্য এই ব্যবস্থা। এখানে শুনানি চলাকালীন অভিযুক্ত এবং নির্যাতনের শিকার শিশুটি এক বারের জন্যও মুখোমুখি হবে না।’’ জেলা বিচারক আরও জানান, নির্যাতিত শিশু ও অভিযুক্ত দু’জনের জন্য আলাদা জায়গা করা হয়েছে। এমনকি আদালতকক্ষে প্রবেশের জন্যও থাকছে আলাদা রাস্তা। বিচারকার্যের প্রয়োজনে এক মাত্র মনিটরে অভিযুক্তকে দেখতে পাবে শিশুটি।
এক প্রশ্নের উত্তরে জেলা বিচারক জানান, এখন হাওড়া আদালতে ৪০০-৪৫০টি পকসো মামলা ঝুলে রয়েছে। বছরে গড়ে প্রায় ১০০টি শিশুর উপরে যৌন নির্যাতনের মামলা হয়। এখন থেকে মামলার বোঝা কিছুটা কমবে।
হাওড়া আদালতের ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি আইনজীবী সমীরবাবু বলেন, ‘‘২০১৫ সাল থেকে এখানে এই রকম একটি আদালতকক্ষ গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ শুরু হয়। কিন্তু বার বার সেই কাজ পিছিয়ে যাচ্ছিল। আইনজীবীরা বারবার এটি চালু করার জন্য আবেদন করার পরে ২০১৮ সালে কাজ শুরু হয়।’’