Ballygunge Station

মাঝপথে কাজ বন্ধ, অসমান প্ল্যাটফর্মে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

রেল সূত্রের খবর, পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ওই স্টেশনে গত কয়েক মাস ধরে প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার কাজ চলছিল। মাসখানেক আগে কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া না পাওয়ায় মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দেয় বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৯:০০
Share:

উঁচু-নিচু: বালিগঞ্জ স্টেশনে এ ভাবেই উঁচু করা হয়েছে প্ল্যাটফর্মের একাংশ। সেই প্ল্যাটফর্মেই চলছে যাত্রীদের ওঠা-নামা। নিজস্ব চিত্র

প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের মাঝের ফাঁক কমাতে দু’ধারে তৈরি করা হয়েছিল প্রায় দেড় ফুট উঁচু এবং দু’ফুট চওড়া কংক্রিটের চাতাল। কিন্তু প্ল্যাটফর্মের মাঝের অংশে সেই কাজ হয়নি। আবার প্ল্যাটফর্মের এক প্রান্তে এই কাজ হলেও অপর প্রান্তে শুরুই হয়নি চাতাল তৈরির কাজ। এর জেরে অসমান হয়ে রয়েছে প্ল্যাটফর্মের একাধিক জায়গা। প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের মাঝের ফাঁকের সমস্যার সমাধান তো হয়ইনি, উল্টে ট্রেনে ওঠানামার সময়ে হোঁচট খাচ্ছেন যাত্রীরা। এমনই অবস্থা শিয়ালদহ ডিভিশনের দক্ষিণ শাখার বালিগঞ্জ স্টেশনে। অসমান উচ্চতার প্ল্যাটফর্মে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই যাতায়াত করছেন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ওই স্টেশনে গত কয়েক মাস ধরে প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার কাজ চলছিল। মাসখানেক আগে কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া না পাওয়ায় মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দেয় বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। তার পর থেকেই বেহাল অবস্থায় পড়ে বালিগঞ্জ স্টেশনের এক এবং দু’নম্বর প্ল্যাটফর্ম। রেল সূত্রের খবর, শুধু ওই স্টেশনই নয়, শিয়ালদহ ডিভিশনের আরও অন্তত ২০টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট তহবিলে অর্থের জোগান বন্ধ হওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি। এর মধ্যে রয়েছে সন্তোষপুর, ঢাকুরিয়া, নরেন্দ্রপুর, বারুইপুর, বারাসত, ব্যারাকপুর, সোদপুর, টিটাগড় এবং খড়দহের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এর মধ্যে বালিগঞ্জ এবং বারুইপুর সংলগ্ন গোচারণ স্টেশনে রেলের তরফে টাকার বরাদ্দ থমকে যাওয়ায় মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ।

বালিগঞ্জ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। মাস কয়েক আগে ওই স্টেশনের তিন এবং চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ শেষ হয়। ওই কাজ চলার সময়েও অর্থসঙ্কট দেখা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে মাঝপথে এ ভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। ওই শাখার নিত্যযাত্রী, সোনারপুরের বাসিন্দা শুভদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘যে ভাবে ট্রেন থেকে ওঠানামা করতে হচ্ছে তাতে যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। রাতের দিকে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’’

Advertisement

কাজ মাঝপথে থমকে গেল কেন?

রেল সূত্রের খবর, যে তহবিল থেকে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজের টাকা দেওয়া হচ্ছিল, সেখানে নতুন করে টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় এই বিপত্তি। ওই কাজের বরাতপ্রাপ্ত একাধিক ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগ, বহু টাকার বিল বকেয়া থাকায় তারা কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। সাত-আট মাস আগেও টাকার অভাবে বেশ কিছু প্ল্যাটফর্মে কাজ থমকে গিয়েছিল বলে রেল সূত্রের খবর। তখন অন্য তহবিল থেকে টাকা দিয়ে কাজ শেষ করা হয়।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে শিয়ালদহ ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ পেলে দ্রুত বকেয়া মেটানো হবে।’’ কিন্তু সেই টাকা কবে আসবে, তা রেলের আধিকারিকেরা কেউই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। আগামী এপ্রিলে নতুন অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার পরে তহবিলে নতুন করে টাকা আসার কথা। পুরনো বকেয়া মেটানোর পরে নতুন কাজ শুরুর জন্য তহবিলে আর টাকা থাকবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি কবে মিটবে, উত্তর মেলেনি সেই প্রশ্নের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement