দিক বদলের পরে ধর্না মঞ্চে শিশু কোলে মহিলারা। শনিবার, কলকাতা পুরসভার কাছে। ছবি: সুমন বল্লভ
পুর ভবনের কাছে এনআরসি বিরোধিতার ধর্না মঞ্চে শনিবার দুপুরে হঠাৎই উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে বচসা বেধে যায় আন্দোলনকারীদের। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে চেয়ার নিয়ে টানাটানিও হয়। পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশকর্তারা কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর পর থেকে আন্দোলন-মঞ্চের দিকও কিছুটা বদলে যায় বলে সূত্রের খবর।
দিন কয়েক ধরে অভিযোগ উঠেছিল, ওই অবস্থানের জেরে নিউ মার্কেট এলাকায় যাওয়া মানুষের অসুবিধা ক্রমেই বাড়ছে। কলকাতা পুরসভার গেটের সামনে যানজট বাড়ায় সমস্যায় পড়েছে পুর প্রশাসন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় জনগণনা পঞ্জি এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে জয়েন্ট ফোরামের তরফে শ’খানেক পুরুষ-মহিলা পুর ভবন লাগোয়া হগ স্ট্রিটে ধর্নায় বসে পড়েন। শুরুতে বলা হয়েছিল, বুধবার সকালেই ওই অবস্থান-আন্দোলন উঠে যাবে। পরে মাইকেই ঘোষণা করা হয় যে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ওই অবস্থান চলবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, যেখানে জায়গায় অবস্থান শুরু হয়েছিল সেটি পুর অফিসারদের গাড়ি রাখার জায়গা। অথচ অবস্থানের কারণে পুরো এলাকাটাই রেলিং দিয়ে ঘিরে দিতে হয়েছিল পুলিশকে। ফলে গত কয়েক দিন ধরে কোনও অফিসারের গাড়ি ঢুকতে পারেনি সেখানে। এ দিন অবশ্য পুলিশ সেখানে বেশ কিছু গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করে। দুপুরের পর থেকে এলাকার পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়। কলকাতা পুলিশের ডিসি পদমর্যাদার অফিসার সেখানে উপস্থিত থেকে গোটা পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেছেন। এমনকি ধর্না মঞ্চে এসে বক্তারা কী বলছেন, তা-ও নথিভুক্ত করে রাখা হয়। এ দিন আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হয়, স্থির হয়েছে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই অবস্থান-আন্দোলন চলবে।
আরও পড়ুন: সাধারণ মহিলা সেজে পথে পুলিশকর্মীরা, ইভটিজিং করলেই শ্রীঘরে
এমন পরিস্থিতি দেখে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় প্রথম এনআরসি-র বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। যা এখন সারা দেশে ছড়িয়েছে। যাঁরা এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করতে চান, তাঁদের সুষ্ঠু ভাবে আন্দোলন চালানোর পরামর্শ দেন তিনি। আবেদনে তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে একটা বড় আন্দোলনকে নষ্ট করবেন না। এ ধরনের আন্দোলনের নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। মানুষের অসুবিধা করে কোনও আন্দোলনের গরিমা থাকে না। সে কথা সকলকে মনে রাখতে হবে।’’ এ দিন আন্দোলনকারীদের তরফে প্রসেনজিৎ বসু বলেন, ‘‘পুলিশই এখানে আমাদের অবস্থান করার জন্য বলেছিল। এ দিন তারাই আমাদের হেনস্থা করেছে।’’