KMC

KMC: টানাটানির সংসারে ফোন বিলে কোপ পুরসভার

গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে অবসর নেওয়া পুরকর্মীদের অনিয়মিত ভাবে পেনশন দেওয়ার পাশাপাশি অবসরকালীন প্রাপ্য টাকার পুরোটা মেটানো হয়নি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ০৭:১১
Share:

কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।

তীব্র আর্থিক সঙ্কটের জেরে অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন এবং অবসরকালীন প্রাপ্য টাকার উপরে আগেই কোপ পড়েছিল। কলকাতা পুরসভায় এ বার কোপ পড়ল আধিকারিকদের টেলিফোন বিলেও!

Advertisement

পুরসভার চিফ ম্যানেজার, ম্যানেজার, ডেপুটি ম্যানেজার থেকে শুরু করে এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রতি মাসে ফোনের বিল বাবদ ৫০০-১২০০ টাকা পান। কিন্তু এ বার ফোনের বিল বাবদ প্রত্যেককে মাসে ২৫০ টাকা করে দেওয়া হবে। বর্তমানে এক জন চিফ ইঞ্জিনিয়ার মাসে ফোনের বিল বাবদ ১২০০ টাকা পান। ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার পান এক হাজার টাকা। এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরা ৭০০, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা ৬০০ এবং সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা ৫০০ টাকা করে পান। অন্য দিকে, চিফ ম্যানেজারেরা পান ১২০০ টাকা। ম্যানেজার ও ডেপুটি ম্যানেজারেরা যথাক্রমে ৭০০ ও ৬০০ টাকা।

এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এত দিন ফোন বিলের টাকা আলাদা চেকে পেতাম। এ বার তা বেতনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ, তা আয়করের আওতায় চলে আসবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন দফতরের ল্যান্ড লাইন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করতে চান পুর কর্তৃপক্ষ। সদর দফতরের কোন বিভাগে কতগুলি ল্যান্ড লাইন সংযোগ রয়েছে, আগেই তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন পুর কমিশনার। পুরসভার টেলিফোন বিভাগ তাঁকে সেই তালিকা পাঠিয়েছে।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে অবসর নেওয়া পুরকর্মীদের অনিয়মিত ভাবে পেনশন দেওয়ার পাশাপাশি অবসরকালীন প্রাপ্য টাকার পুরোটা মেটানো হয়নি। যার জেরে ক্ষোভ দিনদিনই বাড়ছে। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিরোধীরা। খরচ কমাতে পুরসভার বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানেও রাশ টানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার আধিকারিকদের ফোন বিলে কোপ পড়ায় অধিকাংশ কর্মী এই ভেবে আতঙ্কিত যে, পরবর্তী কোপটা বেতনে পড়বে না তো?

সূত্রের খবর, পুর কোষাগারের হাল খুবই খারাপ। বিশেষত, সম্পত্তিকর বাবদ আদায়ের পরিমাণে সন্তুষ্ট নন কর্তারা। পরিস্থিতি এমনই যে, আজ, বুধবার সরকারি ছুটি সত্ত্বেও রাজস্ব আদায় বাড়াতে মূল্যায়ন ও সংগ্রহ এবং ট্রেজ়ারি বিভাগ খোলা থাকছে। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মাসের শেষ। অনেকেই সম্পত্তিকরের টাকা দিতে আসবেন। তা ছাড়া, সোম ও মঙ্গল, পর পর দু’দিন ধর্মঘট থাকায় অনেকে সমস্যায় পড়েছিলেন। তাই বুধবার পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড কালেকশন ও ট্রেজ়ারি বিভাগ খোলা থাকছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, কাজ শেষ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও মোটা টাকা বকেয়া থাকায় ঠিকাদারদের অনেকেই নিত্যদিন পুরসভায় দরবার করছেন। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীরাও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। এক শীর্ষ আধিকারিকের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘করোনার কারণেই রাজস্ব আদায় বিশেষ হচ্ছিল না। পাশাপাশি, কোভিডের মোকাবিলায় মোটা টাকা খরচ হয়েছে। এখন করোনার প্রকোপ কমতেই কর ও রাজস্ব আদায় ধীরে ধীরে বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement