শুরু: সোমবার জোকা-তারাতলা মেট্রোর প্রথম সফরে উৎসাহী যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
ডায়মন্ড হারবার রোডের যানজট এড়িয়ে এক দিন হয়তো মেট্রো চড়ে সোজা এসপ্লানেড পৌঁছনো যাবে। আপাতত এই আশাতেই রয়েছেন বেহালার বাসিন্দারা। তবে, তা কবে পূরণ হবে, সেটা তাঁরা এখনও জানেন না। আপাতত তারাতলা ও জোকার মধ্যেই চলবে ট্রেন।
সোমবার সাতসকালে জোকা স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে ভিড় করেছিলেন বছর পঁয়ষট্টির সরোজকুমার মণ্ডল, বুদ্ধদেব ঘোষেরা। রাজ্য সরকারের শুল্ক বিভাগের প্রাক্তন আধিকারিক সরোজকে পারিবারিক জমির একাংশ ছেড়ে দিতে হয়েছে এই মেট্রোর ডিপো তৈরির জন্য।শাঁখারিপোঁতার ওই বাসিন্দা এখনও নানা জটিলতায় ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে পাননি। তা সত্ত্বেও অনেক আশা নিয়ে প্রথম দিনেরমেট্রোযাত্রার শরিক হতে এসেছিলেন সরোজ। পূর্ব রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বুদ্ধদেব ঘোষও এসেছিলেন লন্ডনবাসী কন্যা বিপশ্বীকে নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘যে বেহালার রাস্তায় কিছুই প্রায় নড়ে না, সেখানে মাথার উপরে মেট্রো ছুটবে, ভেবেই ভাল লাগছে।’’ তাঁর কন্যা মনে করিয়ে দিলেন বেহালার রাস্তায় ট্রাম ছোটার কথা। হলই বা এক ঘণ্টায় একটি ট্রেন, তবু এক বার চাকা গড়ালে তা এগোতে থাকবে বলেই আশা এইপ্রজন্মের তন্ময় ঘোষ, সৌরভ পাত্রদের। প্রথম দিনের মেট্রোযাত্রা স্মরণীয় করে রাখতে এ দিন যাত্রীদের গোলাপ ফুল এবং বিশেষ উপহার দেন কর্তৃপক্ষ। প্রথম যাত্রীর হাতে সেই উপহার তুলে দেন মেট্রো রেলের ডেপুটি চিফ অপারেশন্স ম্যানেজার কৌশিক মিত্র।
এ দিন ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছোঁয়ার আগেই জোকা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এসে থামে মেট্রোর রেক। ঠিক ১০টা ২ মিনিটে সেটি রওনা হয় তারাতলার উদ্দেশে। প্রথম মেট্রোর চালক ছিলেন দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সাহায্য করতে কন্ডাক্টিং মোটরম্যান হিসাবে ছিলেন গৌতম কুমার। এ ছাড়াও চিফ লোকো ইনস্পেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন সমীর রায়।
প্রথম মেট্রোয় ৩০৬ জন যাত্রী সফর করেন। তারাতলা থেকে ফিরতি মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা ছিল ১০০ মতো। প্রথম দিনে ওই মেট্রোয় মোট ৫০০৩ জন যাত্রী সফর করেছেন। কলকাতায় ট্রামের টানে ছুটে আসা, জাপানের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কেন এন্ডো মুগ্ধ প্রথম দিনে যাত্রীদের অপেক্ষা করার ধৈর্য দেখে। তবে তাঁর মতে, ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। রেলপ্রেমী সংগঠনের সদস্য উষ্ণীষ দত্ত বলেন, ‘‘এই মেট্রো মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে আরও অনেক যাত্রীর সুবিধা হবে।’’