রতনলাল সাউ দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা (ইনসেটে) নিজস্ব চিত্র।
রক্তচাপ ও সুগারের সমস্যা। তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম বুধবার সন্ধ্যায়। বাড়ি ফিরে দেখি, মেঝেতে বড় ফাটল। বাইরে শুনলাম অন্যদের চেঁচামেচি। বুঝলাম, দুর্গা পিতুরি লেনে আড়াই বছর আগের অভিশপ্ত রাত ফিরে এসেছে। মেঝের ফাটল বসার ঘরটাকে যেন দু’ভাগ করে দিয়েছে। ফাটল দেওয়ালেও। বাড়িটা কাঁপছে। বুঝলাম, দ্রুত অন্যত্র যেতে হবে।
পুলিশও এসে বলল, বাড়ি ছাড়তে হবে। কিন্তু কোথায় যাব? পরে জানলাম, মেট্রো ক্রিক রো-র একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেছে। বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ি ছাড়লাম।
আমার বয়স ৮০। রাত জাগা বারণ। ঠিক সময়ে খেয়ে নিতে হয়। কিন্তু রাতে খাবার বা ওষুধ, কিছুই খাওয়া হল না। দুশ্চিন্তায় ঘুমও তেমন হল না। ভোরের দিকে একটু ঘুম এসেছিল।
হোটেলে সকালের জলখাবারে ছিল লুচি আর আলুর তরকারি। মনটা খারাপ হয়ে আছে নাতি নিকুঞ্জের জন্য। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। ওর আবার বৃহস্পতিবার স্কুলের অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। দিতে যেতে পারেনি। হোটেলের ঘরে মন খারাপ করে বসে রয়েছে। ওকে এখন কত মাস হোটেলবন্দি থাকতে হবে কে জানে? আড়াই বছর আগে প্রায় তিন মাস হোটেলে থাকতে হয়েছিল।
বার বার এমন দুর্ভোগের পিছনে মেট্রোর গাফিলতি ছাড়া কী-ই বা আছে? আড়াই বছর আগে তিন মাস হোটেলে কাটিয়ে যখন বাড়ি ফিরলাম, তখন মেট্রো কর্তৃপক্ষ আমাদের বাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটও দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও ঘরে সরু ফাটল ধরেছিল। মেট্রোকে সে কথা জানাতে তারা ফাটল সারিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু তা নিশ্চয়ই ঠিক মতো হয়নি। আমার প্রশ্ন, ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার পরেও কী ভাবে এত বড় ফাটল দেখা দেয়?