প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও। তার মধ্যেই দেখা দিল ম্যালেরিয়ার আতঙ্ক। একটি এলাকার ১০০ মিটারের মধ্যে পাঁচ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে খাস কলকাতায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকার রাস্তাঘাট বা নর্দমা, কিছুই ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয় না, যার অন্যতম কারণ সেখানকার বেআইনি পার্কিং। খবর পেয়ে শনিবার এলাকায় যান পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
উত্তর কলকাতার বেচু চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ওই এলাকাটি পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। দিন দশেক ধরে সেখানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ চলছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। একে একে পাঁচ জন তাতে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেআইনি পার্কিংয়ের জেরেই দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকার নর্দমা বা রাস্তাঘাট ঠিকমতো পরিষ্কার হচ্ছে না। ফলে একটু ভারী বৃষ্টি হলেই জল জমে থাকে বহু দিন।
বাসিন্দারা জানালেন, ওই এলাকায় রোজই রাস্তার দু’পাশে গাড়ি এবং জেনারেটর রেখে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে পুরসভার
সাফাইকর্মীরা এলাকায় এসেও রাস্তাঘাট বা নর্দমা পরিষ্কার করতে পারেন না। ফিরে যেতে হয় তাঁদের। অভিযোগ, সমস্যার কথা পুর কোঅর্ডিনেটরকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে থাকা পাঁচ জনের রক্ত পরীক্ষায় ম্যালেরিয়ার জীবাণু মিলেছে। আরও দু’-এক জনের রিপোর্ট আসা বাকি।
গত তিন দিনের বৃষ্টিতে এলাকায় নতুন করে জল জমায় আতঙ্ক বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদেরই এক জন নিমাই কর্মকার বললেন, ‘‘রাস্তার পাশে গাড়ি ও জেনারেটর রেখে দেওয়ার সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে। জেনারেটরের নীচে ও পাইপের ভিতরে দিনের পর দিন জল জমে থাকে। বার বার সরানোর কথা বলা হলেও কোনও কাজ হয়নি। করোনার মধ্যেই এখন ম্যালেরিয়া আতঙ্ক বাড়িয়েছে এলাকায়।’’
ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর সাধনা বসুর অবশ্য দাবি, এলাকার বাসিন্দারা তাঁর সঙ্গে আগে কখনও যোগাযোগই করেননি। তিনি বললেন, ‘‘এলাকার কোথাও যাতে জল জমে না থাকে, তার জন্য প্রতি বছরই নিয়ম করে প্রচার চালানো হয়। এ বছরও আগে থেকেই এলাকা পরিষ্কার রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।’’
এ দিন খবর পেয়েই এলাকায় আসেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। দীর্ঘক্ষণ এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন। এর পাশাপাশি, এলাকায় জমে থাকা জল পরিষ্কার করারও ব্যবস্থা করেন তাঁরা। আগামী দিনে প্রয়োজনে ওই এলাকায় শিবির করা হতে পারে বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শুক্রবারই ওই এলাকার লোকজন যোগাযোগ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ দিন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরাও এলাকায় যান।’’