জমায়েত: ভিতরে প্রবেশ বন্ধ। তবু দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের স্কাইওয়াকের কাছে ভিড় জমালেন দর্শনার্থীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব ঘোষণা মতোই বন্ধ ছিল মন্দিরের সিংহদুয়ার। কিন্তু তাতে কী! মন্দির থেকে কয়েকশো মিটার দূরে ভিড় করে দাঁড়িয়ে কিংবা বালি সেতু থেকে গঙ্গা ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকে পিছনে রেখে নিজস্বী তুলেই সময় কাটালেন একদল উৎসবমুখী মানুষ।
শুক্রবার সারাটা দিন সেই ভিড়কে সামাল দিতেই নাজেহাল হতে হল পুলিশকে। ভিড়ের চোটে মাঝেমধ্যেই যানজটে ফেঁসেছে বালি সেতু। কিন্তু সেই সবকে উপেক্ষা করেই নতুন বছরের প্রথম দিন তথা কল্পতরু উৎসবে পরিবারকে নিয়ে বেড়াতে বেরোনো লোকজন এবং দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল দক্ষিণেশ্বরে। রেল স্টেশনের সামনে স্কাইওয়াকের নীচে রানি রাসমণি রোডের মুখ এ দিন সকাল থেকে ব্যারিকেড করে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। যার জেরে লোকজন ভিড় জমিয়েছিলেন স্কাইওয়াকের নীচে, চার রাস্তার সংযোগস্থল দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডে। কেন মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত যেতে দেওয়া হবে না, তা নিয়েও কেউ কেউ তর্ক জুড়ে ছিলেন পুলিশকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে।
যেমন রানাঘাটের সবিতা বিশ্বাস স্কাইওয়াকের নীচে আটকে গিয়ে বেজায় বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘‘মন্দির বন্ধ, করোনা বলে কি পুজোও দেব না! কল্পতরু উৎসব বন্ধের কথা আগে থেকে ঘোষণা করতে হত।’’ তা শুনে পাশে দাঁড়ানো এক পুলিশকর্মীর সহাস্য মন্তব্য, ‘‘শুধু সিরিয়াল দেখলে হবে? কাগজে, টিভিতে সর্বত্রই মন্দির বন্ধের খবর ছিল।’’
বহু চেষ্টা করেও মন্দিরের দরজা পর্যন্ত পৌঁছতে না পেরে অনেকেই সোজা চলে গিয়েছিলেন বালি সেতুতে। সেখানে বালি থেকে দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তার অর্ধেকটাই এ দিন হয়ে উঠেছিল বেড়ানোর জায়গা। শীতের রোদ গায়ে মেখে সেখানেই পছন্দমতো ছবি, নিজস্বী তুললেন মন্দিরে ঢুকতে না পারা তরুণ-তরুণী থেকে প্রবীণেরা। বারুইপুরের দেবরাজ হালদারের কথায়, ‘‘ভিতরে ঢুকতে পারলে ভাল ছবি হত। কিন্তু কী করব? তবে সেতু থেকে বেশ ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড আসছে।’’
প্রতি বছর কল্পতরু উৎসবের দিন দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেওয়ার লাইন বালি সেতু পার করে চলে যায়। এ বার সেখানেই ছবি তোলার ভিড়। কেউ আবার সেতুর রেলিংয়ে হেলান দিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে গল্প করেই দুপুর কাটিয়েছেন। সেতুর ফুটপাতেই খাবারের পসরা নিয়ে হাজির ছিলেন হকারেরাও।
বালি সেতু থেকে দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ড, এই রাস্তাতেই বার বার চক্কর কেটে সময় কাটিয়েছেন অনেক যুগল। কেউ স্কাইওয়াকের নীচে আটকে গিয়ে শেষে চলে গিয়েছেন আদ্যাপীঠ দর্শনে। আবার কেউ স্কাইওয়াকের ব্যারিকেডের সামনেই দাঁড়িয়ে জোড় হাতে প্রণাম সেরেছেন ভবতারিণীকে।