বিপত্তি: চলছে টালা সেতুর ফুটপাতের রেলিং ভাঙার কাজ। বুধবার সেখানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি বাইক (ইনসেটে)। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
টালা সেতু ভাঙার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে সপ্তাহ তিনেক আগে। সেতুর ভার কমাতে প্রথমে দু’পাশের ফুটপাতের রেলিং ভাঙার কাজ চলছে। অভিযোগ, রেলিং ভাঙার পরে তার ধ্বংসাবশেষ ফুটপাতের উপরেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পথচারীরা বিপদ মাথায় নিয়েই ফুটপাতের বদলে মূল রাস্তা ধরে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন।
চিৎপুর থানা এলাকার বাসিন্দা, ভিক্ষাজীবী এক বৃদ্ধা বুধবার দুপুরে টালা সেতুর ফুটপাত ধরে হাঁটতে গিয়ে পড়ে যান। তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। ওই বৃদ্ধার কথায়, ‘‘সেতুর ভাঙা অংশে হোঁচট খেয়ে পড়েই এই কাণ্ড ঘটল।’’ এ দিন দুপুরে টালা সেতুতে গিয়ে দেখা গেল, ফুটপাতের বদলে অধিকাংশ পথচারীই সেতুর মূল রাস্তা ধরে হাঁটছেন। এক পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে একটি মোটরবাইক এ দিন সেতুর উপরে উল্টে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ওই বাইকচালকের নাম রমেন অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘দু’সপ্তাহ ধরে ভাঙা অংশ ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখছি। কাজ হওয়ার পরেই সেগুলি সরিয়ে ফেললে আমাদের রাস্তায় নেমে হাঁটতে হত না। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।’’
এ দিন দেখা গেল, টালা সেতুর দু’পাশে ফুটপাতের রেলিংয়ের অনেকটা অংশই ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুলিশ জানায়, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফের ভাঙার কাজ শুরু হবে। তবে কবে থেকে সেতুর উপরে গাড়ি চলাচল পুরো বন্ধ হবে, সে বিষয়ে পুলিশ বা পূর্ত দফতর কিছুই জানায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, রেলিংয়ের অনেকটা অংশ না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটলে সেতু টপকে গাড়ি নীচে গিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ‘‘সেতুও ভাঙা হচ্ছে, আবার সেই সেতুর উপরে গাড়িও চলছে। দু’টি কখনওই একসঙ্গে চলতে পারে না। টালা সেতু নিয়ে প্রশাসনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই অবস্থায় গাড়ি চলাচল করলে বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।’’
সেতুর উপরের ভাঙা অংশ সরানো প্রসঙ্গে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ পূর্ত দফতরের। তাদের এ বিষয়ে একাধিক বার বলাও হয়েছে।’’ পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘টালা সেতুর ফুটপাত থেকে ভাঙা অংশ ধীরে ধীরে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। বাকি অংশও দ্রুত সরানো হবে।’’ সেতু ভাঙার পাশাপাশি গাড়ি চলাচল প্রসঙ্গে পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে সেতুর ভার কমাতে কিছু অংশ ভাঙা হচ্ছে। যেটুকু অংশ ভাঙা হয়েছে, তা থেকে বিপদের আশঙ্কা নেই।’’