—প্রতীকী চিত্র।
কখনও জল পড়ছেই না। যেটুকুও বা দিনের কোনও সময়ে পড়ছে, তা সরু ফিতের মতো। গত কয়েক দিন ধরে এমনই অবস্থা চলছে বিধাননগর পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের লাবণি আবাসন-সহ বেশ কিছু এলাকায়। বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, জল সরবরাহের সমস্যা মেটাতে সোমবার থেকেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্রুত সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
লাবণি আবাসিক সমিতির সভাপতি অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবাসিকরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে জল সরবরাহের ক্ষেত্রে তাঁরা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। মাত্র এক বারই জল সরবরাহ করা হচ্ছে। পুরসভাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
কিন্তু পুজোর মুখে এমন সমস্যা দেখা দিল কেন?
পুরসভার একটি সূত্র বলছে, পাম্পিং স্টেশনগুলিতে মেরামতির একটি অংশ থাকে বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রিক্যাল) দফতরের হাতে। বাকি কাজ করে জল সরবরাহ দফতর। ফলে একটি দফতরের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য দফতর কাজে হাত দিতে পারে না। তাই এর আগেও কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, পাম্পিং স্টেশনের পুরো কাজই ভবিষ্যতে জল সরবরাহ দফতরের হাতে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় বলেন, ‘‘একটি পাম্পে কারিগরি সমস্যার জেরেই জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। জলের ট্যাঙ্কার পাঠানোর পাশাপাশি অন্য পাম্প থেকে সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। পুরসভা দ্রুত পদক্ষেপ করেছে।’’
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে নয়, মাত্র এক দিনই জল সরবরাহে সমস্যা ছিল। তবে সরবরাহ বন্ধ ছিল না। ১ নম্বর জলের ট্যাঙ্কের একটি পাম্পের সুইচ বক্স শর্ট সার্কিট হয়ে পুড়ে যায়। তবে অন্য পাম্প থেকে জল সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। ওই পাম্পটি সোমবারই সারিয়ে ফেলা হয়েছে।’’
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, এই সমস্যা কি বিচ্ছিন্ন? তাঁদের কথায়, পাম্পিং স্টেশনগুলির পরিকাঠামো বহু পুরনো। ফলে কারিগরি সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু পুজোর মরসুমে এমন সমস্যা হলে মুশকিল। কারণ, এই সময়ে জলের ব্যবহার বেড়ে যায়।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, পুরনো পরিকাঠামো আমূল বদলানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য পুরনো পাম্পের সংস্কারের পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন পাম্প বসানো হয়েছে। ঠিক তেমন ভাবেই সল্টলেকেও কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মেয়র পারিষদ বীরেন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন, পুজোর কথা মাথায় রেখেই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুজোর দিনগুলিতে যাতে জলের সমস্যা না হয়, তার জন্য নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি মেরামতির কাজও চলবে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু পাম্প মজুত রাখার ভাবনাও রয়েছে।