রবীন্দ্র সরোবরে প্লাস্টিক ব্যবহার অবাধেই

সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রবীন্দ্র সরোবরে যে কোনও রকম প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। এ ছাড়া স্টোভ বা উনুন জ্বালানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে কারণে কোনও ভ্রমণার্থী সরোবরে প্রবেশ করার মুখে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর কাছে প্লাস্টিক আছে কি না পরীক্ষা করেন।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

দূষণ: ভাসছে প্লাস্টিকের বোতল ও থার্মোকলের থালা। নিজস্ব চিত্র

রবীন্দ্র সরোবরে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। সে কারণে ভ্রমণার্থীদের প্লাস্টিক নিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু অভিযোগ, হকারেরা অবাধে সরোবর চত্বরে প্লাস্টিক নিয়ে প্রবেশ করছেন। সম্প্রতি এই অভিযোগ ঘিরে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে সরোবরের নজরদারি নিয়েও। অভিযোগের সত্যতা পরোক্ষে মেনে নিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তাঁদের দাবি, প্লাস্টিক নিয়ে প্রবেশ করার নিয়ম নেই হকারদের। তা ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হবে। কোনও হকারের কাছে প্লাস্টিকজাত জিনিস মিললে তাঁকে সরোবর চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

Advertisement

সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রবীন্দ্র সরোবরে যে কোনও রকম প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। এ ছাড়া স্টোভ বা উনুন জ্বালানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে কারণে কোনও ভ্রমণার্থী সরোবরে প্রবেশ করার মুখে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর কাছে প্লাস্টিক আছে কি না পরীক্ষা করেন। কিন্তু অভিযোগ, হকারেরা সরোবর চত্বরে ঢুকে নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্লাস্টিকের প্যাকেট এবং চায়ের কাপ ব্যবহার করছেন। আগুন জ্বেলে চলছে চা তৈরিও। তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আরও অভিযোগ, সরোবরের জলে প্রায়ই প্লাস্টিকের বোতল ও থার্মোকলের থালা ভাসতে দেখা যাচ্ছে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হন প্রাতর্ভ্রমণকারী ও পরিবেশকর্মীদের একাংশ।

অন্যদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও হকারদের ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যতিক্রম কেন?

Advertisement

কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ‘মানবিক’ কারণে তাঁরা হকারদের প্রবেশে বাধা দিতে পারেন না। প্রশাসন থেকে এমন কোনও নির্দেশও দেওয়া নেই। কিন্তু আইনত তাঁরা পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানতে বাধ্য। সেই নিয়ম বলছে, প্লাস্টিকের পরিবর্তে হকারেরা কাগজের বা পরিবেশ দফতরের চিহ্নিত করে দেওয়া ৫০ মাইক্রন অথবা তার বেশি পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করতে পারবেন। কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা পরোক্ষে মানছেন, নজরদারিতে গাফিলতি থাকার ফলেই এমনটা ঘটে থাকতে পারে।

রবীন্দ্র সরোবরের নজরদারির জন্য একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কমিটির অন্যতম সদস্যা সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবর একটি জাতীয় সরোবর। এখানে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে বহু বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই সরোবর চত্বরে প্রবেশ করার সময়ে সঙ্গে প্লাস্টিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু হকারদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।’’

পরিবেশবিদদের একাংশ জানান, ৫০ মাইক্রন বা তার বেশি পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করলে সমস্যা হত না। কিন্তু অভিযোগ, সরোবরের মধ্যে যে ধরনের প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলি ৫০ মাইক্রনের থেকে অনেক কম পুরু। যা ব্যবহারের ফলে নষ্ট হচ্ছে সরোবরের জল ও এলাকার নিকাশি। আগুন জ্বালানোর ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে প্রবেশমূল্য চালু করার কথা বলেছিল পরিবেশ আদালত। কিন্তু তা হয়নি। প্রবেশমূল্য চালু হলে হকারেরা ঢুকতে পারবেন না। কখনও ঢুকতে পারলেও সেই সংখ্যা এতই কম হবে, যে সরোবরে নজরদারির ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement