‘নিশ্ছিদ্র’ রবীন্দ্র সরোবরে ছিদ্রপথেই চলছে প্রবেশ

রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘জাতীয় আদালতের নির্দেশ মেনে নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। অরক্ষিত অংশ রাতের মধ্যেই ঘিরে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪০
Share:

অরক্ষিত: টালিগঞ্জ স্টেশন লাগোয়া এই এলাকা দিয়েই অবাধে রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে আসা-যাওয়া চলছে। (চিহ্নিত)। তা আটকাতে সেখানে লাগানো হচ্ছে টিনের বেড়া। শুক্রবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

রবীন্দ্র সরোবরের সব ক’টি গেটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও ভিতরে ঢোকার ফাঁক-ফোঁকর রয়েই গিয়েছে। সরোবরের টালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন ধার দিয়ে অবাধে প্রবেশ করছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের মধ্যে ওই অংশ ঘিরে দেওয়া হবে। তা ছাড়াও সরোবরের ভিতরে পুণ্যার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে ১৮টি গেটে দু’জন মহিলা-সহ মোট সাত জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের দাবি করেছে কেএমডিএ।

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘জাতীয় আদালতের নির্দেশ মেনে নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। অরক্ষিত অংশ রাতের মধ্যেই ঘিরে দেওয়া হবে।’’ কর্তৃপক্ষ জানান, ওই অংশটিতে আগে পাঁচিল ছিল। টালিগঞ্জ রেল স্টেশনের সম্প্রসারণের কাজের জন্য রবীন্দ্র সরোবর লাগোয়া ওই পাঁচিলের একাংশ ভাঙা হয়। সেই অংশ মেরামতির কাজ করছে কেএমডিএ। ভাঙা পাঁচিলের সামান্য অংশ দিয়েই এলাকার লোকজন যাতায়াত করেন। সেই অংশটিও ঘেরা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রাণময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি রবীন্দ্র সরোবরে যেতে ওই ফাঁকা জায়গা দিয়েই যাতায়াত করি। কারণ, ঘুরে যেতে হলে অনেক সময় লাগে। তবে ছটের দিন সরোবর বন্ধ থাকবে। ফলে ওই দিন আর যাব না।’’

Advertisement

শুক্রবার সরোবর চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে সব ক’টি গেটের সামনেই কেএমডিএ-র নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সরোবরের সব গেট বন্ধ রাখার বিজ্ঞপ্তি টাঙানো রয়েছে সব ক’টি গেটেই। আজ, শনিবার সকাল থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ। এ দিনই সরোবর সংলগ্ন বরজ রোডের একাংশ টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। বরজ রোডের ছোটখাটো দোকান তুলে দিয়ে পুরো জায়গা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। যাতে পুণ্যার্থীরা সরোবরের রেলিং টপকে ভিতরে ঢুকতে না পারেন।

নিরাপত্তারক্ষীদের অভিযোগ, গোবিন্দপুর লাগোয়া রেললাইনের ধারে অরক্ষিত গেট দিয়ে প্রচুর পুণ্যার্থী প্রবেশ করেন। গত বছর ছট পুজোয় ওই গেট বন্ধ রাখা সত্ত্বেও পুণ্যার্থীরা ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন। একই সমস্যা হয়েছিল বুদ্ধমন্দিরের কাছের দু’টি গেটেও। তবে সেখানে গেট ছোট থাকায় বেশি পুণ্যার্থী প্রবেশ করতে পারেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবিতে এই তিনটে গেট খোলা রাখতে হয়। ওই গেটগুলি বন্ধ রাখা ছাড়াও বিশেষ নজরদারি থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। এই গেটগুলিতে দু’টি করে তালা দেওয়া হবে। এক নিরাপত্তারক্ষী অভিযোগ করেন, গোবিন্দপুরের গেটে ক’দিন আগে একটি তালা লাগানো হয়েছিল। তালার ফাঁকে ইটের টুকরো ঢুকিয়ে দেওয়ায় তা অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে ওই তালা ভেঙে দিতে হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানান, প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল গেট বন্ধ রাখা ছাড়াও জলাশয়ের ধার ঘিরে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী বাঁশ পোঁতাও হয়েছিল। এ দিন দুপুরে কর্তৃপক্ষ জানান, সব ক’টি গেট যদি বন্ধ থাকে তা হলে কোনও পুণ্যার্থীদের ভিতরে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে জলাশয়ের ধার ঘেরা অর্থহীন এবং খরচসাপেক্ষ। শুধু তাই নয়, জলাশয়ের ঘেরা অংশ নিয়েও পুণ্যার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। তার পরেই বাঁশ খুলে নেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement