যারা বৃষ্টিতে..: এ বার পুজোয় কি সঙ্গী হবে ছাতাও, চিন্তায় শহরবাসী। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
গত এক দশকে ব্যতিক্রম ছিল গত বছর।
একমাত্র গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহই সম্পূর্ণ শুকনো ছিল। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল শূন্য মিলিমিটার! আসন্ন অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গত বছরেরই পুনরাবৃত্তি হোক, এমনই প্রার্থনা পুজো উদ্যোক্তা থেকে সাধারণ মানুষের। তবে তা হবে কি না, এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কারণ, দফতরের তথ্য বলছে, গত বছর বাদ দিলে গত এক দশকে প্রতিবারই অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাচক্রে চলতি বছর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট পড়েছে। ৫ অক্টোবর সপ্তমী এবং ৮ অক্টোবর দশমী। এখনও আকাশের মুখ ভার দেখে তখন শুকনো আবহাওয়া থাকবে কি না, তা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, গত এক দশকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ২০১৩ সালে। সে বছর অক্টোবরের প্রথম সাত দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৪১.৯ মিলিমিটার! বৃষ্টি-সরণিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ২০১৫ সাল। প্রথম সাত দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সে বছর ছিল ৬১.৭ মিলিমিটার। আবহবিদদের অনেকেই বলছেন, এমনিতে ১৫ অক্টোবর নাগাদ সারা দেশ থেকে বর্ষা বিদায় নেয়। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা বিদায়ের পালা সচরাচর সাঙ্গ হয় ১০ অক্টোবর নাগাদ। তবে তার পরেও অল্পবিস্তর বৃষ্টি চলতেই থাকে।
নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, গত দশ বছরের মধ্যে ২০০৯ এবং ২০১৭ সালে দুর্গাপুজো হয়েছিল সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। ২০১০, ২০১২, ২০১৩, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৮ সাল—এই বছরগুলোয় দুর্গাপুজো হয়েছিল অক্টোবরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে। শুধু ২০১১ এবং ২০১৪ সালে দুর্গাপুজো পড়েছিল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। ওই দু’বছর প্রথম সপ্তাহের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬.২ এবং ৩৩.৩ মিলিমিটার। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ হল বর্ষার শেষার্ধ। ফলে সাধারণত কমবেশি বৃষ্টি এ সময়টা হয়েই থাকে।’’
আবহবিদদের অনেকেই জানাচ্ছেন, পুজোর সময়ে বৃষ্টি হবে কি না এ নিয়ে পূর্বাভাস এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। সে জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু বৃষ্টিপাতের ধারা যদি লক্ষ করা যায়, দেখা যাবে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘বৃষ্টি হবে কি না, হলে কতটা পরিমাণ হবে, সে সবই কিছু দিন পরে বোঝা যাবে। সেই অনুযায়ী পুজোর বৃষ্টির পূর্বাভাস করা হবে।’’
আপাতত সেই পূর্বাভাসের দিকেই তাকিয়ে শহরবাসী।