Dum Dum

ঝুঁকির পারাপার বন্ধে স্থায়ী সমাধান কত দূরে

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দমদম স্টেশনের উত্তর প্রান্তে বনগাঁগামী লাইনের গা ঘেঁষে লোহার সিঁড়ি দিয়ে দিব্যি চলছে পারাপার।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০২:৩৯
Share:

বিপজ্জনক: প্রশ্ন এই পথ নিয়েই। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

রেলের আইন অনুযায়ী, লাইন পারাপার দণ্ডনীয় অপরাধ। লাইন পারাপারের সময়ে কেউ ধরা পড়লে এক হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ছ’মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। অথচ এমন কড়া আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দমদম স্টেশনের উত্তর প্রান্তে বনগাঁগামী লাইনের গা ঘেঁষে লোহার সিঁড়ি দিয়ে দিব্যি চলছে পারাপার। বড় কালীবাড়ি রোড সংলগ্ন ওই সিঁড়ির উল্টো দিকে রয়েছে দমদম স্টেশনের উত্তর কেবিন।

Advertisement

পূর্ব সিঁথি রোড সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা বড় কালীবাড়ি রোড দিয়ে এসে ওই সিঁড়ি দিয়ে স্টেশনে পৌঁছন অথবা মেট্রোয় যেতে ফুটওভার ব্রিজ ধরেন। ওই সিঁড়ি যেখানে গিয়ে মিশেছে, তার খুব কাছেই বনগাঁগামী রেললাইন বাঁক নিয়েছে। ফলে বাঁকের আড়ালে থাকা ট্রেনটিকে যাত্রী দেখতে না পারলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। রেল এই সমস্যার কথা জেনেও লাইন পারাপার ঠেকাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ।

ওই বিপদ এড়াতে দীর্ঘদিন ধরে ভূগর্ভস্থ পথের দাবি জানিয়ে আসছেন ‘দমদম ইস্টার্ন অ্যান্ড মেট্রো রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যেরা। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন একাধিক বার সমীক্ষা করলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে যাত্রী সংগঠনের অভিযোগ।

Advertisement

রাজ্যে তো বটেই, সারা দেশেও রেললাইনে কাটা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় শিয়ালদহ ডিভিশন শীর্ষে। প্রতি বছর এই ডিভিশনে হাজারের বেশি মৃত্যু হয়। অভিযোগ, মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে রেলের তরফে যাত্রীদের সচেতন করা হলেও জরিমানা আদায়ের উপরেই জোর দেওয়া হয় বেশি। অর্থাৎ অবৈধ পারাপার হলে তবেই তো জরিমানা আদায় হবে। ফলে কমানো যাচ্ছে না এই প্রবণতা।

যাত্রী সংগঠনের অভিযোগ, ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করে স্থায়ী সমাধানের জন্য গত কয়েক বছরে শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানজারকে অজস্র চিঠি লেখা হয়েছে। তবু কোনও ফল হয়নি। সংগঠনের সম্পাদক সুজিতকুমার সাধ্য বলেন, ‘‘ওই ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি হলে রেল এবং মেট্রোর যাত্রীদের অনেক সুবিধা হবে। দমদম মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় সরাসরি পৌঁছতে পারবেন বড় কালীবাড়ি রোড এবং পূর্ব সিঁথি রোড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।”

রেল সূত্রের খবর, শিয়ালদহকে কেন্দ্র করে যে চারটি স্টেশনকে ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেমের আওতায় আনার কথা, তার মধ্যে দমদমও রয়েছে। ওই প্রকল্প সম্পূর্ণ করতে গেলে স্টেশনে ঢোকা- বেরোনোর পথ নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে লোহার সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীদের ওঠানামা বন্ধ করতেই হবে।

পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘স্থানীয় নিত্যযাত্রীদের থেকে চিঠি পেয়েছি। তবে সরকার থেকে এ নিয়ে প্রস্তাব আসেনি।’’

রেলের অন্য আধিকারিক জানান, অতি ব্যস্ত দমদম শাখায় ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করতে হলে বহু ট্রেন বাতিল করতে হবে। এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ও রয়েছে। ফলে রেলের একার তৎপরতায় ওই কাজ সম্ভব নয়।

ওই জায়গায় ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির প্রস্তাব সরকারি স্তরে না থাকার বিষয়টি রেলের তরফে যাত্রী সংগঠনকে গত জানুয়ারিতেই লিখিত ভাবে জানানো হয়। এর পরে ওই সংগঠনের তরফে স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায় এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। সূত্রের খবর, তাঁরাও এ নিয়ে রেলকে চিঠি লিখছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement