দমকলের গাড়ির নীচে পিষে মৃত মহিলা

এক বিপদ ঠেকাতে গিয়ে ঘটল  অন্য বিপদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

অঘটন: দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে মৃতার জুতো। মঙ্গলবার, স্ট্র্যান্ড রোডে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

এক বিপদ ঠেকাতে গিয়ে ঘটল অন্য বিপদ।

Advertisement

আগুন লাগার খবর পেয়ে স্ট্র্যান্ড রোড থেকে রওনা দিয়েছিল দমকলের একটি গাড়ি। উত্তর বন্দর থানার সামনের মোড়় ঘুরতেই সেই দমকলের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক মহিলার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম গৌরী দাস (৩৫)। বড়বাজার থানার পুলিশ ঘাতক দমকলের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ পোস্তা থানা এলাকার নলিন শেঠ রোডে একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় একটি গয়নার দোকানে আগুন লাগে। খবর পেয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ফায়ার স্টেশন থেকে দু’টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। একই সময়ে উত্তর বন্দর থানার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি আগুন লাগার খবর পেয়েই রওনা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গা়ড়িটি রাজা উডমাউন্ট স্ট্রিট ও স্ট্র্যান্ড রোডের মোড়ে বাঁক নেওয়া মাত্রই রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলাকে ধাক্কা মারে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা স্থানীয় ফুটপাতের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী পিন্টু দাসের কথায়, ‘‘আমরা ওই এলাকায় ফুটপাতে থাকি। আমি তখন শৌচাগারে গিয়েছিলাম। স্ত্রী দোকান থেকে কিছু একটা কিনতে গিয়েছিল। ফিরে এসে দেখি রাস্তায় ভিড়। কাছে গিয়েই স্ত্রীর মাথা থেঁতলানো দেহ দেখতে পাই।’’ পরে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সে গৌরীদেবীর দেহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, যে হেতু দমকলের ওই গাড়িটি আগুন নেভানোর কাজে যাচ্ছিল তাই গাড়িটিকে প্রাথমিক অবস্থায় ছে়ড়ে দেওয়া হয়। বড়বাজার থানার পুলিশ গাড়ির চালক উৎপল সরকারের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও অবহেলা করে মৃত্যু ঘটানোর দায়ে মামলা রুজু করেছে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই গাড়িচালককে আত্মসমর্পণের জন্য নোটিস

পাঠানো হবে।

তিন মেয়েকে নিয়ে সংসার গৌরি-পিন্টুর। বড় ও মেজো মেয়ে লিলুয়ার একটি হোমে থেকে লেখাপড়া করে। ছোট মেয়ে মা-বাবার কাছেই থাকে। পিন্টুর কথায়, ‘‘চালকের যেন কড়া শাস্তি হয়।’’ এ দিন ঘাতক দমকল গা়ড়িটিতে থাকা আধিকারিক শ্যামল দাস বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য দমকলের গাড়ি ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে চলে। সেই সময় রাস্তার উপর যদি কেউ চলে আসে, আমরা কী করব!’’

দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। আগুন নেভানোর সময় দমকলের ঘণ্টাধ্বনি সত্ত্বেও ওই মহিলা রাস্তায় ছিলেন। গাড়ির পিছনের চাকায় ওই মহিলা পিষ্ট হয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’’

দমকল জানিয়েছে, পোস্তা থানা এলাকার ওই বহুতলের একটি ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা দমকলে খবর দেন। দমকলের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, দরজায় তালা লাগানো। পরে ঘরের তালা ভেঙে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে দমকলের প্রাথমিক অনুমান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement