ফাইল চিত্র
গণপরিবহণ বন্ধ থাকার কারণে ভোগান্তি আগেই ছিল। তার সঙ্গে যোগ হল নাগাড়ে বৃষ্টি। দুইয়ে মিলে বৃহস্পতিবার পথে মানুষের সফর-যন্ত্রণা আরও তীব্র হল। বুধবার রাত থেকে হওয়া দফায় দফায় বৃষ্টিতে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বিস্তীর্ণ অংশে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। বহু গলিপথের মুখও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিজস্ব বাইক বা স্কুটারে যাঁরা আগে অফিস যাতায়াত করেছেন, তাঁদের অনেকেই জমা জলে বিপত্তির আশঙ্কায় বেরোতে পারেননি। যে সব বাইক-ট্যাক্সির চালকেরা বুধবার কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেছিলেন, এ দিন টানা বৃষ্টিতে তাঁদেরও অনেককে ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে।
শেষমেশ অফিসে পৌঁছতে অনেকে মরিয়া হয়ে ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাবের খোঁজ করতে শুরু করেন। কিন্তু, বৃষ্টিতে চাহিদার তুলনায় ক্যাবের সংখ্যা কম থাকায় সেখানেও ভাড়ার হার দ্রুত চড়তে শুরু করে। ফলে অন্যান্য দিনের তুলনায় প্রায় আড়াই থেকে তিন গুণ ভাড়া গুনে যাতায়াত করতে হয়েছে যাত্রীদের। গড়িয়া মহামায়াতলার বাসিন্দা সুমন্ত্র পণ্ডা বি বা দী বাগের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আধ ঘণ্টা চেষ্টার পরে ক্যাব পেয়েছি। ভাড়া দিতে হল প্রায় সাড়ে পাঁচশো টাকা।’’ বিকেলে বাড়ি ফেরার পথেও সল্টলেক, এসপ্লানেড, পার্ক স্ট্রিট, ময়দান, রবীন্দ্র সদন-সহ বিভিন্ন এলাকায় ক্যাব বা ট্যাক্সির জন্য যাত্রীদের হাপিত্যেশ করতে দেখা গিয়েছে। প্রায় একই অভিজ্ঞতা হয়েছে শহরের বিভিন্ন শপিং মলে আসা কর্মীদেরও।
এআইইউটিইউসি-র বাইক ট্যাক্সি সংগঠনের নেতা শান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘বাইক-ট্যাক্সির চালকদের বেশির ভাগ দুর্ঘটনা এবং বাইকের ক্ষতির আশঙ্কায় সে ভাবে পথে নামতে পারেননি। ফলে, যাত্রী ভোগান্তি তুলনায় বেশি হয়েছে।’’ ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জল ঢুকে একাধিক গাড়ি বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অনেক চালক বেরিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। চাহিদা বেশি থাকায় সার্জ বেড়েছে হু হু করে।’’
এ দিন রেল এবং মেট্রো স্টেশনে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের অনেকেই। অধিকাংশ যাত্রীই বলছেন, গণপরিবহণ ছাড়া এ ভাবে ক্যাব, ট্যাক্সি বা বাইক-ট্যাক্সির ভরসায় বর্ষার মরসুমে অফিস করা মুশকিল। বৃষ্টি বেশি হলে বাসই একমাত্র ভরসা, বলছেন তাঁরা।