—প্রতীকী চিত্র।
পার্ক সার্কাস ও শিয়ালদহ স্টেশনের মাঝে অতীতে লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় একাধিক বার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে ফের এক তরুণীর ব্যাগ-সহ তিনটি দামি মোবাইল ফোন এবং প্রায় দু’হাজার টাকা ছিনতাই হয়েছে। দুষ্কৃতীকে বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন তিন মহিলা। বারুইপুর-শিয়ালদহগামী ট্রেনে ওই ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ বছর তিরিশের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বারুইপুর স্টেশনে শিয়ালদহগামী ট্রেনে ওঠেন বাগুইআটির বাসিন্দা মিতুন চৌধুরী। মিতুনদেবীর অভিযোগ, ‘‘পার্ক সার্কাস স্টেশন পার হওয়ার পরে মহিলা কামরায় আমরা মাত্র তিন জন ছিলাম। কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না। পার্ক সার্কাস স্টেশন ছাড়ার পরে হঠাৎ ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে এক মহিলাকে চিৎকার করতে শোনা যায়। মেয়েকে নিয়ে পিছন ফিরতেই দেখি, বছর ষোলোর এক কিশোরীর ব্যাগ ধরে টানাটানি করছে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক।’’ ওই যুবককে বাধা দিতে গেলে, মিতুনদেবী ও তাঁর মেয়েকে বেধড়ক মারতে থাকে ওই যুবক। মিতুনদেবী আরও বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে উঠে দাঁড়াতেই
ওই যুবক আমাদের দিকে তেড়ে আসে। আমাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। যুবকটি আমাদেরও ব্যাগ, টাকা দিতে বলে। আপত্তি করায় আমার মেয়ের
ব্যাগ ধরে টানতে শুরু করে।’’ পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী ওই মহিলার কন্যা স্বাগতা বলেন, ‘‘ব্যাগ যাতে না নিতে পারে তার জন্য আমি ও মা পাল্টা প্রতিরোধ শুরু করি। আর এক মহিলা যাত্রীও এসে রুখে দাঁড়ান। ওই যুবক আমার মুখে চড়, ঘুষি মারতে থাকে। ধস্তাধস্তিতে তিন বার ট্রেনের কামরার মেঝেয় পড়ে যাই।’’ প্রায় মিনিট দশেক ধরে এই কাণ্ড চলার পরে স্বাগতার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। আহত হন স্বাগতার মা এবং অন্য যাত্রীও। স্বাগতার মা মিতুনদেবী বলেন, ‘‘যুবকটিকে বাধা দেওয়ার বহু চেষ্টা করা সত্ত্বেও সে মেয়ের ব্যাগটি ছিনতাই করে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে নেমে পড়ে।’’
ঘটনার তিন দিন পরেও আতঙ্ক কাটেনি মা-মেয়ের। সে রাতে ট্রেন শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছনোর পরে পুলিশকর্মীরা তাঁদের নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। মিতুনদেবী ও তাঁর মেয়ের অভিযোগ, ‘‘মহিলা কামরায় পুলিশ থাকা বাধ্যতামূলক। সে দিন রাতে প্রতিরোধ করার সময়ে ওই যুবক আমাদের ট্রেন থেকে ফেলে দিতেও পারত। কোনও পুলিশ না থাকার খেসারত দিতে হল।’’ বুধবার রাতে শিয়ালদহ জিআরপি-তে অভিযোগ করেন মিতুনদেবী। শিয়ালদহ জিআরপি-র ওসি অনুপম দাস বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’ মহিলা কামরায় পুলিশ না থাকার প্রসঙ্গে তিনি জানান, পর্যাপ্ত পুলিশকর্মীর অভাবে সব সময়ে মহিলা কামরায় পুলিশ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।