প্রতীকী ছবি।
করোনার চিকিৎসায় প্লাজ়মা বা রক্তরস দানের সচেতনতা গড়ে তুলতে সহায়ক হল অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মঞ্চ। রবিবার সল্টলেকের একে ব্লকের কমিউনিটি হলে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করানোর আয়োজন করা হয়। ৮০ জন এ দিন অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করান। দু’দিনের মধ্যে তাঁরা ফল জানতে পারবেন। কোভিড-যোদ্ধা হিসেবে বেশ কয়েক জন ডাক্তার এবং প্লাজ়মা বা রক্তরসদাতাকেও এ দিন সম্বর্ধনা জানানো হয়েছে।
শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া মানে কোভিড-পরিস্থিতিতে কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় বলেই মনে করছেন আয়োজকেরা। তাঁদের তরফে শিবাংশু সরকার এ দিন বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, কোভিড আক্রান্তদের পাঁচ জনের মধ্যে চার জনই উপসর্গহীন। অনেকে টেরও পাচ্ছেন না কখন কোভিড হয়েছে। আপনা থেকেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির খবর পেলে তাঁরা ভবিষ্যতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা খানিকটা কম বলে নিশ্চিন্ত হবেন।’’ সেই সঙ্গে যাঁদের দেহে অ্যান্টিবডি মিলবে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। পরে কারও প্রয়োজনে করোনা চিকিৎসার জন্য তাঁদের প্লাজ়মা দান করতেও উদ্বুদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর-পর্বের ছাত্রী কোভিড-জয়ী এবং প্লাজ়মা দাতা, সল্টলেকেরই বাসিন্দা প্রজ্ঞা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন উপস্থিত ছিলেন। প্রজ্ঞা ও তাঁর মা-বাবা তিন জনেই জুলাইয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন। গত ১৪ অগস্ট কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারদের অনুমোদন পেয়ে প্লাজ়মা দান করেন প্রজ্ঞা। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই অন্তত ২০টি কেন্দ্রে কোভিড চিকিৎসার জন্য প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক গড়ায় জোর দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই অবস্থায় সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের প্লাজ়মা কিছুটা সঙ্কটজনক কোভিড-রোগীদের নিরাময়ে কার্যকর বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এ দিন অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে আসা নাগরিকদের উদ্দেশে প্রজ্ঞা বলেন, ‘‘অতিমারির পরিস্থিতিতে এই সাহায্যটুকু করা নৈতিক দায়বদ্ধতা। অনেক সময়ে বয়স একটু বেশি হলে বা অন্য অসুস্থতা থাকলে প্লাজ়মা সংগ্রহ করলে তা কাজে লাগে না। তাই কোভিড-জয়ী তরুণ প্রজন্মের বিশেষ ভাবে প্লাজ়মা দিতে এগিয়ে আসা উচিত।’’