Offline classes

Mobile Addiction: মোবাইলের নেশায় বুঁদ ছেলেমেয়ে, অনলাইন ক্লাস থেকে নিষ্কৃতি চাইছেন অভিভাবকরা

কোচিং সেন্টারগুলির আধিকারিক এবং গৃহশিক্ষকদের একাংশের মতে, সব অভিভাবক কিন্তু এখনই তাঁদের ছেলেমেয়েদের অফলাইন ক্লাসে পাঠাতে চাইছেন না।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

কোভিড-পর্বের ভয়াবহতা কাটিয়ে অফলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে স্কুলে স্কুলে। তবে কিছু স্কুল বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে অনলাইন ক্লাসও চালু রেখেছে। পাশাপাশি, বহু কোচিং সেন্টারে শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন অনলাইনে। যা দেখেশুনে অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, স্কুল এবং কোচিং সেন্টারগুলি কি পুরোপুরি অফলাইন ক্লাসে ফিরবে না? কারণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, স্কুল ও টিউশন পুরোপুরি অফলাইনে না ফিরলে তাঁদের ছেলেমেয়েদের মোবাইল-আসক্তি কমছে না।

Advertisement

অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, অফলাইনে পড়ানোর মতো পরিকাঠামো তৈরি করেননি বহু কোচিং সেন্টার বা গৃহশিক্ষক। ফলে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনেই ক্লাস করতে হচ্ছে। যদিও কোচিং সেন্টারগুলির পাল্টা দাবি, গৃহশিক্ষকের খোঁজ করতে এসে অনেক অভিভাবক এখনও অনলাইন ক্লাসকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাই বিকল্প হিসেবে সেই ব্যবস্থাও রাখতে হচ্ছে তাদের। তবে কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি ঠিক থাকলে তাঁরা পুরোপুরি অফলাইন ক্লাসে চলে আসবেন।

কোচিং সেন্টারগুলির আধিকারিক এবং গৃহশিক্ষকদের একাংশের মতে, সব অভিভাবক কিন্তু এখনই তাঁদের ছেলেমেয়েদের অফলাইন ক্লাসে পাঠাতে চাইছেন না। লেক টাউনের একটি টিউটোরিয়াল হোমের এক আধিকারিক জানালেন, এখনও বহু অভিভাবক তাঁদের ছেলেমেয়েদের জন্য অনলাইনেই পড়ানোর উপায় খুঁজছেন। তাঁদের মতে, করোনা পুরোপুরি চলে যায়নি। কিন্তু স্কুল খুলে যাওয়ায় বাইরে বেরোতেই হচ্ছে ছেলেমেয়েদের। স্কুল থেকে ফেরার পরে ফের পড়তে যাওয়ার জন্য তাঁরা আর ছেলেমেয়েদের পাঠাতে চাইছেন না। কিছু অভিভাবকের আবার প্রশ্ন, ফের দিল্লিতে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। অতিমারির চতুর্থ ঢেউ যদি আসে, তখন কি আবার অফলাইন থেকে অনলাইন ক্লাসে যাওয়া সম্ভব হবে? তাই অনেকেই অনলাইন ক্লাসের পক্ষে সওয়াল করছেন।

Advertisement

তবে অভিভাবকদের একাংশ একটি বিষয়ে সহমত। তা হল, করোনা পুরোপুরি চলে না-যাওয়ার জন্য অনলাইন টিউশন পছন্দ করলেও তাঁরা চান, বিজ্ঞানের বিষয়গুলি পড়ানো হোক অফলাইনেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোভিড-বিধি মেনে অফলাইন টিউশনের পরিকাঠামো এখনও তেমন ভাবে তৈরি হয়নি। একটা ছোট জায়গায় বহু পড়ুয়া একসঙ্গে পড়ছে। এক অভিভাবকের কথায়, “স্কুলে কিছুটা হলেও করোনা-বিধি মানা হচ্ছে। কিন্তু কোচিং সেন্টারগুলিতে সেই উপায় কোথায়? একটি মাত্র ঘরে অনেককে পড়ানোর ব্যবস্থা সেখানে। তাই উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়া ওদের গৃহশিক্ষকের কাছে পাঠাতে দ্বিধায় ভুগছি। আবার, শিক্ষকেরাও এখন বাড়ি এসে পড়াতে চাইছেন না।’’

তবে কিছু শিক্ষকের মতে, কোচিং সেন্টারে সবাই অফলাইনে পড়তে না এলেও এখন স্কুলগুলির উচিত অফলাইন ক্লাসে ফিরে যাওয়া। কারণ স্কুলে এক জন ছাত্র বা ছাত্রী শুধু পড়াশোনাই করে না, খেলাধুলো-সহ বিভিন্ন রকম কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে তার চরিত্র গঠনও হয়। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা পুরোপুরি অফলাইন ক্লাস শুরু করেছি। দীর্ঘদিন পরে অফলাইন ক্লাসে পড়ুয়াদের প্রাথমিক ভাবে কিছু অসুবিধা হলেও মানিয়ে নিতে দেরি হবে না।’’

তবে এখনও পুরোপুরি অফলাইন ক্লাসে ফেরেনি সাউথ পয়েন্ট। সেখানকার কিছু কিছু ক্লাসের পড়ুয়ারা এখনও সপ্তাহে তিন দিন বা চার দিন স্কুলে আসছে। বাকি দিনগুলিতে তারা ক্লাস করছে অনলাইনে। ডিপিএস, রুবি পার্কও অনলাইন ক্লাসের বিকল্প চালু রেখেছে। অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, কবে পুরোপুরি অফলাইনে ফেরা হবে? সাউথ পয়েন্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “আমরা ধীরে ধীরে অফলাইনে ফিরছি। করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আশা করা যাচ্ছে, আর দিন দশেকের মধ্যে সব ক্লাস অফলাইনেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement