প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতি আরও কিছুটা উন্নতি না হলে তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে বা অফলাইনে পরীক্ষায় বসাতে অনিচ্ছুক অভিভাবকদের একটি অংশ। তাঁরা এই অনিচ্ছার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েওছেন। যদিও বেশির ভাগ কর্তৃপক্ষই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা অনলাইনে নয় অফলাইনেই পরীক্ষা নিতে আগ্রহী।
ডিপিএস রুবি পার্ক স্কুলের অভিভাবকদের অনেকের মতে, তাঁরা চান আরও কিছু দিন অনলাইন ক্লাস হোক। এমনকি পরীক্ষাও হোক অনলাইনে। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘এখনও তো পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি। করোনার প্রতিষেধক প্রদান শুরু হয়েছে ঠিকই কিন্তু আরও বেশি মানুষের কাছে ওই প্রতিষেধক পৌঁছনো দরকার। ওই কর্মসূচি আরও কিছুটা এগনোর পরেই আমরা ছেলেমেয়েদের ক্লাসে পাঠাতে ইচ্ছুক।’’ কিছু অভিভাবক আবার দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রি-টেস্টও চান অনলাইনেই। বাগুইআটির ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা বলেন, ‘‘কত জন পড়ুয়া অনলাইনে এবং কত জন অফলাইনে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক সেই নিয়ে অভিভাবকদের থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু সংখ্যক অভিভাবক চাইছেন অনলাইনে পরীক্ষা দিক তাঁদের ছেলেমেয়েরা। যদিও আমরা অফলাইনেই পরীক্ষা নিতে আগ্রহী।’’ নিউ টাউন স্কুলের এক কর্ণধার সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘কিছু কিছু পড়ুয়া জানিয়েছে তারা অনলাইনে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু নবম থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা আমরা অফলাইনেই নিতে চাই।’’ আবার সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষও জানাচ্ছেন, নবম ও একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা তাঁরা অফলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে ১২ তারিখ স্কুল খুললে ক্লাস ও পরীক্ষা অফলাইনে হওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি অধিকাংশ পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। তা হলে কেন কিছু অভিভাবক অনলাইনেই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা এবং পরীক্ষায় আগ্রহী? অনেকের মতে, শুধু করোনা আতঙ্কের জন্যই নয়, গত কয়েক মাসে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠা কিছু পড়ুয়া চাইছে না অফলাইনে ফিরে যেতে।
শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে অফলাইনে পরীক্ষা দিলে আখেরে যে পড়ুয়াদেরই লাভ তা অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছেন স্কুল শিক্ষকেরাও। শিক্ষকদের একটি অংশের মত, অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়া অনেক সহজ। বাড়িতে বসে পরীক্ষা দেওয়া যায়, অনেক সময়ে পরীক্ষা দেওয়ার পরে উত্তর ঠিক হয়েছে কি না, তা বই দেখে মিলিয়েও নিচ্ছে বহু পড়ুয়া। কিন্তু এ ভাবে পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে আখেরে ক্ষতি তাদের। কারণ, বোর্ড পরীক্ষা তো অফলাইনেই দিতে হবে। তখন অসুবিধা হবেই বলে মনে করছেন স্কুলের অধ্যক্ষেরা।