Organ Donation

মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত প্রৌঢ়ার অঙ্গে জীবন ফিরে পেলেন চার জন

জাহানারার দাদা ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মেহবুব বলেন, ‘‘মামা এসেই বিষয়টিতে সম্মতি দেন এবং আমাদেরও রাজি হতে বলেন। বুঝতে পারছি, আমার মা নিজে চলে গিয়ে আরও কত জনকে নতুন জীবন দিয়ে যাচ্ছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ছেলের মোটরবাইকে সওয়ার হয়েছিলেন মা। রাস্তার স্পিড ব্রেকারে বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারাতেই ছিটকে পড়েন ওই প্রৌঢ়া। মাথায় চোট পান। জেলা থেকে তাঁকে আনা হয় কলকাতায়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে প্রৌঢ়ার ব্রেন ডেথ হয়। এর পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায় রাজি হয়ে পরিজনেরা মরণোত্তর অঙ্গদানে সম্মতি দেন। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা জাহানারা বিবির (৫৮) দান করা অঙ্গে জীবন পেলেন চার জন রোগী।

Advertisement

জানা গিয়েছে, কান্দির ভবানীপুরের বাসিন্দা জাহানারা গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ছেলে মেহবুব আলমের বাইকে চেপে পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। শুক্রবার মেহবুব বলেন, ‘‘স্পিড ব্রেকারটা দেখতে পাইনি। মা-ও টাল সামলাতে না পেরে ছিটকে পড়েন। প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখান থেকে বহরমপুর মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেয়।’’ তিনি জানান, সেখানে সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এর পরে ওই প্রৌঢ়াকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে স্থানাস্তরিত করা হয়।

৫ ডিসেম্বর সেখানে এনে রেড জ়োনে ভর্তি করা হয় মহিলাকে। এর পরে তাঁকে ট্রমা কেয়ারের ক্রিটিক্যাল কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, জাহানারার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। ঘটনার পর থেকেই তিনি সংজ্ঞাহীন ছিলেন। ৬ ডিসেম্বর চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, ওই প্রৌঢ়ার ব্রেন ডেথ হচ্ছে। তখন থেকেই তাঁরা জাহানারার ছেলে ও অন্য আত্মীয়দের মরণোত্তর অঙ্গদানের কথা বোঝাতে শুরু করেন।

Advertisement

জাহানারার দাদা ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মেহবুব বলেন, ‘‘মামা এসেই বিষয়টিতে সম্মতি দেন এবং আমাদেরও রাজি হতে বলেন। বুঝতে পারছি, আমার মা নিজে চলে গিয়ে আরও কত জনকে নতুন জীবন দিয়ে যাচ্ছেন।’’ হুমায়ুনের কথায়, ‘‘মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে অন্যের পাশে দাঁড়ানোর মতো মহৎ কাজ আর কী হতে পারে।’’

সম্মতি মিলতেই গ্রহীতার খোঁজ শুরু করে ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)। তা মিলতেই বৃহস্পতিবার সকালে অঙ্গ তোলা শুরু হয়। জাহানারার দু’টি কিডনি পেয়েছেন এসএসকেএমে ভর্তি ৩৫ বছরের এবং ২১ বছরের দুই যুবক। যকৃৎ পেয়েছেন ওই হাসপাতালেরই ২৫ বছরের এক তরুণী। হায়দরাবাদের কৃষ্ণা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে চিকিৎসাধীন ৭২ বছরের এক বৃদ্ধা পেয়েছেন ফুসফুস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement