—প্রতীকী চিত্র।
কখনও অচেনা কোনও ওয়েবসাইটে বিপুল ছাড়ে নামী-দামি ব্র্যান্ডের জামাকাপড় কেনার টোপ দেওয়া হচ্ছে। কখনও বলা হচ্ছে, নামী সংস্থার প্রসাধনী মিলবে নামমাত্র দামে। কখনও বা দেওয়া হচ্ছে বিপুল অঙ্কের শপিং কুপন জেতার টোপ! পুজোর আগে আমজনতাকে ঠকিয়ে টাকা লুট করতে এমন সব ফন্দি নিয়েই মাঠে নেমেছে জালিয়াতেরা। ইতিমধ্যেই প্রতারণার এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। সেই কারণে অপরিচিত কোনও ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটার আগে সতর্ক হওয়ার কথা বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা।
বিদ্যুতের বিল না মেটালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয় দেখিয়ে বা নামী চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার বিস্তর অভিযোগ কয়েক বছরে জমা পড়েছে পুলিশে। সেই সমস্ত ঘটনা গোচরে আসতেই সাধারণ মানুষকে বার বার সতর্ক হতে বলেছেন পুলিশকর্তারা। পুলিশ তথা সাইবার বিশেষজ্ঞদের লাগাতার প্রচারে খানিক ‘সতর্ক’ আমজনতাকে ফাঁদে ফেলতে তাই পুজোর মুখে কেনাকাটার টোপ দিচ্ছে জালিয়াতেরা। পুলিশি সূত্রের খবর, কেনাকাটায় মোটা ছাড়ের সুযোগ নিতে গিয়ে টাকা খোয়ানোর কয়েকটি ঘটনা ইতিমধ্যেই নজরে এসেছে। শুরু হয়েছে তদন্তও।
আজকাল অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনে কেটাকাটা সারেন। এই ধরনের ক্রেতাদের ‘টার্গেট’ করছে সাইবার প্রতারকেরা। বিপুল, অস্বাভাবিক ছাড়ের কথা বলে ছড়ানো হচ্ছে প্রতারণার জাল। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নামী সংস্থার জিনিসে বিপুল ছাড়ের কথা বলে বিভিন্ন লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছে। তাতে ক্লিক করলেই সর্বস্ব খোয়ানোর ঘটনা ঘটছে। শপিং কুপন জেতার নাম করেও এই চক্র প্রতারণা চালাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। আরও জানাচ্ছেন, পুজোর আগে যে হেতু কেনাকাটার পরিমাণ বাড়ে, তাই একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইটকে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের সামনের সারিতে নিয়ে এসে প্রতারণা সংঘটিত করছে জালিয়াতেরা। সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘সবটাই প্রতারকদের প্রতারণার ধরনের রং পাল্টানো। এখন যে হেতু পুজোর আগে অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা বেড়েছে, তাই এই মাধ্যমকে টার্গেট করা হচ্ছে। অপরিচিত কোনও ওয়েবসাইটে অস্বাভাবিক ছাড় বা কম দাম দেখলেই সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে ওয়েবসাইটের নম্বরে যাচাই করে নেওয়া ভাল। তা হলেই বোঝা যাবে, সেটি ভুয়ো, না কি আসল।’’
লালবাজার জানিয়েছে, পুজোর কেনাকাটা বা মোটা ছাড়ের নামে প্রতারণার ঘটনা আটকাতে তারাও সক্রিয়। মানুষকে সচেতন করার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘সাইবার প্রতারকেরা প্রতারণার ভোল পাল্টায়। তাদের আটকাতে পুলিশের তরফেও প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করা হয়। পুজোর আগে সচেতনতার কর্মসূচিও চালু রাখা হয়েছে।’’