—প্রতীকী চিত্র।
মুচিপাড়া থানা এলাকার ছাত্রাবাসে মোবাইল চোর সন্দেহে ইরশাদ আলম নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় আরও এক অভিযুক্ত ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করল। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম পারবেশ ওরাওঁ। তাঁর বাড়ি জলপাইগুড়িতে। শনিবার সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আগেই ওই ছাত্রাবাসের ১৪ জন অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পারবেশকে নিয়ে ইরশাদকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫। ধৃত পারবেশ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল স্নাতকোত্তরের ছাত্র।
বেলগাছিয়ার বাসিন্দা, ৩৭ বছরের ইরশাদ চাঁদনি চকে একটি দোকানে টেলিভিশন সারাইয়ের কাজ করতেন। গত ২৮ জুন তিনি ওই ছাত্রাবাস চত্বরে কফি কিনতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে মোবাইল চোর সন্দেহে ইরশাদকে মারতে মারতে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রাবাসের কয়েক জন আবাসিক। ছাত্রাবাসেও তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে ইরশাদকে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। গত ২৭ জুন ওই ছাত্রাবাসের এক আবাসিক শঙ্কর বর্মণের মোবাইল চুরি হয়েছিল। তার পরের দিনই ঘটে এই ঘটনা।
পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন পারবেশ। মোবাইলের টাওয়ারের সূত্র ধরে শনিবার জলপাইগুড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় আরও কয়েক জন পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই মামলার তদন্তে সাত সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ।
রবিবার পারবেশকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগের ধৃতদের জেরা করে পারবেশের নাম উঠে এসেছে। ইরশাদকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় তিনি জড়িত। ঘটনার পর থেকে পারবেশ পলাতক ছিলেন।’’ পারবেশকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানান অরূপ। পারবেশের আইনজীবী না থাকায় তাঁর হয়ে মামলা লড়েন কলকাতার লিগ্যাল এড ডিফেন্স কাউন্সেলের আইনজীবী নবনীতা মণ্ডল। পারবেশকে যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে নবনীতা পাল্টা বলেন, ‘‘ইরশাদের ঘটনার সঙ্গে পারবেশ জড়িত নন। ঘটনার সময়ে তিনি ছাত্রাবাসে ছিলেন কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। পারবেশ মোটেও পালাননি। তিনি জলপাইগুড়িতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। জলপাইগুড়িতেই তাঁর মামার বাড়ি। পুলিশ সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে।’’ বিচারক পারবেশকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন। প্রসঙ্গত, আগে ধৃত ১৪ জনেরও ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়েছে।