—প্রতীকী চিত্র।
গঙ্গায় তলিয়ে গিয়ে ছাত্রটি নিখোঁজ হওয়ার পরে পেরিয়ে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। কিন্তু তার খোঁজ মেলেনি। মাসখানেক ধরে থানা-পুলিশ করার পরেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে নিজেদের উদ্যোগে আসানসোল থেকে শহরে এসে ছেলের খোঁজে জেলেপাড়া ঘুরছে নিখোঁজ ছাত্রের পরিবার।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৫ অগস্ট। আসানসোল থেকে কলকাতায় এসে তিন বন্ধু সকাল সকাল পৌঁছে গিয়েছিলেন হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে এ দিক-ও দিক ঘুরে বেড়িয়ে হাওড়ার চাঁদমারি ঘাটের কাছে যান ওই তিন যুবক। তাঁদের মধ্যে এক জন ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকলেও সৌমেন ধাড়া এবং ইন্দ্রজিৎ ধাড়া নামে দুই বন্ধু গঙ্গায় স্নান করতে নামেন। কিন্তু জলের মধ্যে কিছুটা এগিয়ে যেতেই আচমকা গঙ্গায় স্রোতের টানে তলিয়ে যান দু’জনেই। ঘটনার পরের দিন কলকাতা পুলিশের উত্তর বন্দর থানা এলাকার গঙ্গা থেকে ইন্দ্রজিতের দেহ মিললেও খোঁজ মেলেনি বছর একুশের সৌমেনের। এর পরে সপ্তাহখানেক ধরে কার্যত বন্দর এলাকার বিভিন্ন থানা এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসে ঘুরে বেড়িয়েছে সৌমেনের পরিবার।
আসানসোলের গ্রিন পার্ক এলাকার বাসিন্দা সৌমেন দুর্গাপুরের একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। কলকাতা ঘুরতেই বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন হবে, তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না পরিবার। সৌমেনের মামা বিশ্বনাথ স্বর্ণকার বলেন, ‘‘ওর মা তো এখনও বিশ্বাস করে, ছেলে বেঁচে আছে। প্রতিদিনই কিছু অলৌকিক ঘটবে বলে আশা করে। ভাবে, এই বুঝি ছেলের খোঁজ মিলেছে জানিয়ে কোনও ফোন আসবে।’’ বিশ্বনাথ জানান, ঘটনার পর থেকে নিয়মিত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন তাঁরা। সপ্তাহে এক-দু’বার আসানসোল থেকে কলকাতায় এসে কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিস, থানায় ঘুরেও যেতেন। কিন্তু তার পরেও সৌমেনের সন্ধান মেলেনি। তাই নিখোঁজ ছেলেকে পুলিশ খুঁজে দেবে, সেই আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন তাঁরা। তবে হাল ছাড়তে নারাজ পরিবার। তাই সৌমেনের খোঁজে নিজেদের উদ্যোগেই গঙ্গার আশপাশের জেলেপাড়ায় চষে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সদস্যেরা।। ইতিমধ্যেই চেতলা, বেহালা-সহ উত্তরের একাধিক জেলেপাড়ায় গিয়েছিলেন তাঁরা। বিশ্বনাথের কথায়, ‘‘পুলিশ তো আর গঙ্গায় নামে না। কিন্তু মাছ ধরতে তো গঙ্গায় নিয়মিত জেলেরা নামেন। ওঁরা যদি কিছু দেখতে পান বা দেখে থাকেন, ওঁরা যদি কাউকে উদ্ধার করে রাখেন— সেই আশাতেই পাড়া খুঁজে খুঁজে ওঁদের কাছে যাচ্ছি। কিন্তু এখনও কোনও আশার আলো দেখতে পাইনি।’’