রাজ্যে জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আগেই সতর্ক করেছে প্রশাসন। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে চিন্তার আবহে মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হল আরও দু’জন শিশুর। মঙ্গলবার মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে একজন অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, হৃদ্রোগের চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। তবে শিশুটির অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ)-এ রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে এবং তার পর শারীরিক অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয় শিশুটির।
এই নিয়ে শনিবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত শহরের হাসপাতালে পাঁচটি শিশুর মৃত্যু হল। জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে শিশুদের মৃত্যু নিয়ে ক্রমেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে রাজ্যে। গত তিন দিনে যে পাঁচটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেরই বয়স দু’বছরের নীচে। মঙ্গলবার সকালে মেডিক্যাল কলেজে যে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, তার বয়স ৬ মাস। নাম আদিত্য দাস। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জন্ম থেকেই হার্টের সমস্যা ছিল ওই শিশুর। হৃদ্যন্ত্রে ছিদ্র থাকায় চিকিৎসা চলছিল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই সে হাসপাতালে ভর্তি। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আদিত্যের শরীরে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল, ঠাণ্ডা লাগা এবং সর্দিকাশিও হয়েছিল তার।
মেডিক্যাল কলেজে আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে সোমবার রাতে। তবে তার শরীরে অ্যাডিনোভাইরাস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। যদিও সর্দি-কাশি, জ্বর, ঠাণ্ডা-লাগা ছিল। এই শিশুটির শরীরে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে জানা যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
রাজ্যে জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আগেই সতর্ক করেছে প্রশাসন। তবে একই সঙ্গে রাজ্যবাসীকে আতঙ্কিত হতে বারণ করে স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যের সব শিশুর মৃত্যুই অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে হয়নি। বরং বেশিরভাগই মারা গিয়েছি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে। সোমবার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। তিনি জানান শিশুদের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে আরও সচেতন হচ্ছে রাজ্য।