Crime

গৃহবধূর বয়ানে অসঙ্গতি, ট্যাংরা কাণ্ডে গ্রেফতার ২

মহেশতলা থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:২০
Share:

সিসিটিভি ফুটেজে এই গাড়িটিই ধরা পড়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

ট্যাংরায় গৃহবধূ ‘অপহরণ’ কাণ্ডে নয়া মোড়। মঙ্গলবার রাতে অপহরণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি কলকাতা পুলিশের। এটা নিছক একটি গাড়ি দুর্ঘটনা বলে ধারণা তাদের। সাতটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ এবং হাসপাতালে গৃহবধূপিয়ালি প্রামাণিকের ( নাম পরিবর্তিত)মামাশ্বশুর উজ্জ্বল প্রামাণিকের ( নাম পরিবর্তিত) মৃত্যুকালীন জবানবন্দীতে এমনই তথ্য উঠে আসছে। এই ঘটনায় মহেশতলা থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাম আব্দুর রহমান। ওই অ্যাম্বুল্যান্সে ছিলেন তাঁর শ্যালক তাজউদ্দিন। তাঁকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আচমকা ওই পিয়ালিকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। বাঁচাতে গিয়ে মামাশ্বশুর গাড়ির ধাক্কায় মারা যান। এমনই জানিয়েছিলেন ওই পিয়ালি। কিন্তু পুলিশের দাবি, সিসিক্যামেরা এবং উজ্জ্বলের মৃত্যুকালীন জবাবনবন্দীতে ঠিক উল্টো ঘটনা ধরা পড়ছে। মহিলার বক্তব্য ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল। কিন্ত আসলে গাড়িটি ঠিক তার উল্টো দিকে যাচ্ছিল বলে ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে চায়না টাউনের কাছে রোগীর আত্মীয়কে নামিয়ে মল্লিকবাজারের দিকে যাচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে এনআরএস হাসপাতালে গৃহবধূর মামাশ্বশুরের জবানবন্দিও পিয়ালির বর্ণনার সঙ্গে মিলছে না। একটি লিখিত বয়ানও হাতে রয়েছে পুলিশের কাছে। তাতেও এমন কোনও ঘটনার উল্লেখ নেই।

তদন্তকারীরা এখন জানার চেষ্টা করছেন, কেন ওই মহিলা ভুল তথ্য দিতে গেলেন? কারও নির্দেশে কি এমন মিথ্যে কথা বলছেন? পুলিশের দাবি, ওই মহিলা এবং তার পরিবার বুধবার রাত পর্যন্ত জোর করে অপহরণের চেষ্টার বিষয়টিতেও অনড় রয়েছেন।

Advertisement

এই অ্যাম্বুল্যান্সেই ওই মহিলাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: হাত টেনে ধরে বলল, গাড়িতে তুলে নে, এখনও আতঙ্কে ট্যাংরার সেই বধূ​

মঙ্গলবার ঘটনাটি সামনে আসতে তোলপাড় শুরু হয় কলকাতা জুড়ে। একটি সিসিটিভি ফুটেজে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি চিহ্নিত হয়ে যায়। গতকাল রাত থেকেই কলকাতা পুলিশের পদস্থ অফিসাররা অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন। অবশেষে বুধবার বিকালে দুই অভিযুক্তের মধ্যে এক জনকে পাকড়াও করা গিয়েছে। এ দিন মহেশতলা থেকে গাড়ির চালক আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শ্যালক তাজউদ্দিনকে পাশে নিয়ে তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

গতকাল রাতে পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে বিয়েবাড়ি থেকে ফিরছিলেন পিয়ালি।তাঁর অভিযোগ, গোবিন্দ খটিক রোড ধরে হেঁটে আসার সময় ইএম বাইপাসের দিক থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স তাঁর গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। গাড়ির দরজা খুলে তাঁকে গাডি়তে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী।

আরও পড়ুন: হিন্দু হোস্টেল নিয়ে স্থায়ী সমাধান চায় প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা, এখনও ঘেরাও উপাচার্য​

পিয়ালির চিৎকার-চেঁচামেচিতে আত্মীয়রা ছুটে এলে, ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তাদের মধ্যে একজনকে ধরতে গেলে গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন ওই মহিলার মামাশ্বশুর উজ্জ্বল। গাড়ির চাকায় তাঁর জামা আটকে যায়। সেই অবস্থাতেই তাঁকে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে বৈশালী মোড়ের দিকে প্রায় ৫০-৬০ মিটার নিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, রাত ৩টে নাগাদ মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। পুলিশ এই ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement