প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তকে বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী করে লড়তে চলেছে বামফ্রন্ট।
রবিবার বিধাননগরে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে সিপিএম নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘অসীমবাবুর মতো নেতার নেতৃত্বে লড়াই হবে। আমরা জিতব। নিশ্চিত ভাবেই অসীমবাবু মেয়র হবেন।’’
কিন্তু সেই মেয়র পদপ্রার্থী অসীম দাশগুপ্তের সামনে তৃণমূল ‘মুখ’ হিসেব কাকে আনবে? উত্তরে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘অসীমবাবু মানুষের রায়ে ২০১১-র বিধানসভায় পরাজিত হয়েছিলেন। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনেও তিনি পর্যুদস্ত হন। পুরভোটে এ বার সিপিএম ওঁকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাইছে। আমাদের এমন অবস্থা হয়নি যে, ওঁকে দেখে আগে থাকতে কাউকে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে আনতে হবে। নির্বাচনে জয়ের পরে তৃণমূল কংগ্রেস মেয়র ঠিক করবে।’’
এ দিন ৪১টি আসনের মধ্যে ৩৬টি-র প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে বামফ্রন্ট। বাকি আসনের প্রার্থীও দ্রুত ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
রাজারহাটে বাম প্রার্থীদের সিংহভাগই নতুন। সেই নতুন মুখের মধ্যে রয়েছেন রাজারহাটে সিপিএমের প্রবীণ মুখ রবীন মণ্ডল এবং বিধাননগরের ক্ষেত্রে রয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও। কেন না, ওই দু’জন আগে কখনও পুরসভা স্তরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।
পুরনোদের মধ্যে মাত্র এক জন রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি মৌসুমী সাহা। তার বাইরে ওই পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের সিপিএম কাউন্সিলর তাপস মালাকারের স্ত্রী সোমাদেবীকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাপসবাবুর এলাকাটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে দলের প্রার্থী হয়েছেন সন্ধ্যা দে। তিনি দশ বছর আগে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। একই ভাবে ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন দীনেশ মণ্ডল। তিনিও দশ বছর আগে কাউন্সিলর ছিলেন।
বিধাননগরের ক্ষেত্রেও ৬ জন নতুন মুখ। পুর-নির্বাচনে আগে লড়েননি অসীমবাবু। সে অর্থে তিনিও নতুন। পুরনো মুখ বলতে শাশ্বতী মণ্ডল, রাধানাথ চাদ, অসীম গুহ, অলকা পাত্র প্রমুখ।
পুরনোদের মধ্যে প্রয়াত সিপিএম সাংসদ অমিতাভ নন্দীর স্ত্রী তথা বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ইলা নন্দীর নাম তালিকায় নেই। তিনি বলেন, ‘‘দল চেয়েছিল। আমিই চাইনি। তা আগেই বলেছি।’’
কেন এত নতুন মুখ? রাজারহাটে সিপিএমের দায়িত্বে থাকা বরিষ্ঠ নেতা রবীন মণ্ডলের দাবি, ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসন সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। ফলে বহু পুরনো প্রার্থীকেই টিকিট দেওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘এর মধ্যেও যাঁরা টিকিট পেয়েছেন, সকলেই লড়াকু। নির্বাচনে তাঁরা নিজ নিজ জায়গায় তৃণমূলের সঙ্গে সমানে-সমানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’’
এ দিকে রাজারহাটের দিক থেকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডটিতে রবিবার প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে অনিতা বিশ্বাসকে। তিনি রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। কিন্তু এলাকা পুনর্বিন্যাসের জন্য তাঁর নাম প্রথমে বাদ পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অনেক টানাপড়েনের পরে রবিবার সন্ধ্যায় অনিতাদেবীর নাম চূড়ান্ত হয়।
আজ, সোমবারই তৃণমূলের ৪১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা।