নিজের থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও তা জানতেই পারেননি উচ্চপদস্থ কর্তারা। সংবাদমাধ্যমে এ কথা জেনে চোখ কপালে ওঠে লালবাজারের শীর্ষকর্তাদের। তার পরেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার লালবাজারের কর্তারা মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় ফুলবাগান থানার কর্তব্যরত পুলিশকর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা শুরু করলেন।
অভিযোগ, ফুলবাগান থানা এলাকায় মঙ্গলবার শব্দবাজির প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয়েছিল শুভজিৎ গড়াই ও আকাশ দত্ত নামে দুই তরুণকে। শারীরিক হেনস্থার শিকার হন এক তরুণী। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
ওই দুই তরুণের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে কাদাপাড়ার একটি সিনেমা হলের সামনে যখন চার জন তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়েছিলেন, তখন কালীপুজোর বিসর্জনের জন্য একটি ম্যাটাডর যাচ্ছিল। সেখান থেকেই কয়েক জন যুবক রাস্তায় শব্দবাজি ছুড়ে ছুড়ে ফাটাচ্ছিল। কয়েক হাত দূরের কিয়স্কে পুলিশের কাছে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গেলে ম্যাটা়ডরের যুবকদের হাতে মারধর খেতে হয় শুভজিৎ, আকাশ ও তাদের আরও দুই সঙ্গীকে।
জখম দুই তরুণের অভিযোগ, ওই ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশকর্তারা অভিযুক্ত ক্লাবের নাম ও ম্যাটাডরটির নম্বর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেননি। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাঁরা অভিযোগপত্রে ক্লাবের নাম লিখতে রাজি হন না। হেনস্থার লিখিত অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে অপরিচিত ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, লালবাজার তো দূরের কথা, ফুলবাগান থানার উচ্চপদস্থ কর্তাদেরও মঙ্গলবার রাতের কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা এই ঘটনার কথা জানাননি। কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা এই তাণ্ডব সম্পর্কে জানতে পারেন সংবাদমাধ্যম থেকে। তার পরেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেন। তার পরেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং বুধবার ম্যাটাডরটি আটক করা হয়।
লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা জানান, কেন ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা অভিযোগপত্রে ক্লাবের নাম লিখতে অস্বীকার করেন এবং পুরো বিষয়টি কেন তাঁরা উপরওয়ালার কাছে প্রকাশ করেননি, সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ধৃতদের নাম সোমনাথ মাইতি, সোমনাথ বেরা, অজয় মল্লিক ও শান্তনু প্রসাদ। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে ধৃতদের দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।