পাশে অ্যাম্পুল, বিছানায় নার্সের মৃতদেহ

পুলিশ জানাচ্ছে, বড়িশা পূর্ব পাড়ায় বাপের বাড়িতে এসেছিলেন পেশায় নার্স মাধ্যমী। রবিবার রাতে তিনি ডিউটি করে ফেরেন। সোমবার অনেক বেলা পর্যন্ত সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁর মা জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে মেয়েকে ধাক্কা মেরে তুলতে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০১:৫০
Share:

মাধ্যমী মাইতি

বড়িশায় এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মাধ্যমী মাইতি (২৮) নামে ওই বধূর বাবা থানায় অভিযোগ করেছেন, মাধ্যমীর স্বামী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই হরিদেবপুর থানা তাঁর স্বামী চিরঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানাচ্ছে, বড়িশা পূর্ব পাড়ায় বাপের বাড়িতে এসেছিলেন পেশায় নার্স মাধ্যমী। রবিবার রাতে তিনি ডিউটি করে ফেরেন। সোমবার অনেক বেলা পর্যন্ত সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁর মা জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে মেয়েকে ধাক্কা মেরে তুলতে যান। তখনই বিষয়টি সবার নজরে আসে। মাধ্যমীর বাবা দরজা খুলে ঘরে ঢোকেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাধ্যমীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, মাধ্যমী নিজেই কোনও বিষাক্ত পদার্থ সিরিঞ্জের মাধ্যমে তাঁর শরীরে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঘরের মধ্যে থেকে একটি ইঞ্জেকশনের অ্যাম্পুল পেয়েছে পুলিশ। বাইরে মিলেছে সদ্য ব্যবহৃত একটি সিরিঞ্জও। মৃতার হাতে গ্লাভসও পরা ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, কী ধরনের বিষাক্ত পদার্থ মৃতার শরীরে ঢুকেছে তা ময়না তদন্তের পরে সঠিক জানা যাবে। বিষক্রিয়া ছাড়া মৃত্যুর অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, ময়না তদন্তে সেটাও জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

মাধ্যমীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর দিদির জন্য পাত্র চেয়ে ২০১৩ সালে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। তাতে যোগাযোগের জন্য মাধ্যমীর ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। সেই ফোন নম্বরের সূত্রেই চিরঞ্জিতের সঙ্গে আলাপ হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্স মাধ্যমীর। বাড়ির অমতেই তিনি এ বছরের জানুয়ারি মাসে চিরঞ্জিতকে বিয়ে করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মৃতার দিদি গৌতমীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর বোনের উপরে অত্যাচার চালাত চিরঞ্জিত। শুধু শারীরিক অত্যাচারই নয়, মানসিক ভাবেও নির্যাতন চলত বলে অভিযোগ গৌতমীর। এর বিহিত চেয়ে গত ২০ জুন হরিদেবপুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগও দায়ের করেছিলেন মাধ্যমী। গৌতমীদের অভিযোগ, পুলিশ মাধ্যমীকে তিন দিন পরে যোগাযোগ করতে বলে। কাঁদতে কাঁদতে মাধ্যমীর মা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘পুলিশ তখন ব্যবস্থা নিলে আমার মেয়েকে এ ভাবে মরতে হত না।’’

লালবাজার সূত্রে খবর, নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement