মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৫৬ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টি ওয়ার্ডে প্রকোপ তুলনায় বেশি। ওই ছ’টি ওয়ার্ড ঘিরে আজ, বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, আপাতত কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় ডেঙ্গির প্রকোপ সীমাবদ্ধ রয়েছে। কেন তা বাড়ছে, তার কিছু কারণও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই অনুযায়ী এর পরে পদক্ষেপ করা হবে।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আবর্জনা সাফাই থেকে শুরু করে এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ হলেও খাল ও জলাশয়গুলির সংস্কার না হওয়ায় সেখানে বংশবৃদ্ধি করছে মশা। যদিও পুরসভার দাবি, মশা নিধনে খালগুলিতে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি, সচেতনতার অভাবের ছবি চোখে পড়েছে পুর এলাকার বেশ কিছু জায়গায়। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি আবাসনে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে মশার বাড়বাড়ন্তের কারণ সন্ধানে গিয়ে পুরকর্মীরা দেখেন, কোনও ফ্ল্যাটে ফুলের টবে জমে আছে জল। কোনও বাড়িতে আবার চৌবাচ্চায় জল রয়েছে। সেখানে মিলেছে লার্ভা।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, গত বছর করোনা সংক্রমণের সময়ে এলাকায় নিয়মিত জীবাণুনাশের কাজ হয়েছিল। ফলে ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগের প্রকোপ ততটা দেখা যায়নি। কিন্তু এ বার জীবাণুনাশের কাজ তুলনায় কম হয়েছে। পুরসভার অবশ্য দাবি, এ বছরও এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ হয়েছে। তবে পুজোর সময় থেকে টানা ভারী বৃষ্টির জন্য সেই কাজ করেও বিশেষ লাভ হয়নি। বরং সেই অতিবৃষ্টির কারণে জমে থাকা জল মশার প্রকোপ বৃদ্ধির সহায়ক হয়েছে বলেই মনে করছেন পুরসভার অনেকে।
যদিও বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাড়ি বাড়ি ঘুরে সচেতনতার প্রচারের কাজ করেন পুরকর্মীরা। কেউ করোনা বা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কি না, বাড়ির ভিতরে জল জমে আছে কি না, লার্ভা রয়েছে কি না— সেই সব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষকে জানান। সেই কাজ যদি ঠিক মতো হয়েই থাকে, তা হলে এই অবস্থা কেন?
দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসকের দাবি, এলাকার পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। তাপমাত্রা নামতে শুরু করায় আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তিনি জানান, মূলত ছ’টি ওয়ার্ডে পাঁচ জনের বেশি করে ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছেন। মশার প্রকোপ বৃদ্ধির কারণ এবং উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রশাসকের দাবি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ, সচেতনতার প্রচার, এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা-সহ মশা নিয়ন্ত্রণে সব কাজ নিয়মিত চলছে।