ফাইল ছবি
কলকাতা পুরসভার পরিসংখ্যান বলছে, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এ শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে গত বছরের তুলনায় তিন গুণ। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭৫ জন। এ বছরে ওই সংখ্যাটা ২২৯। সম্প্রতি কালীঘাটে ডেঙ্গিতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
পুরসভার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বর্ষা দেরিতে এলে ডেঙ্গির দাপট দেখা যায় সাধারণত অগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে। তাই এ বার তাঁদের আশঙ্কা, জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যেই ডেঙ্গি এমন চেহারা নিলে আগামী তিন মাসে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভেক্টর কন্ট্রোল টিম প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে মশার লার্ভা মারবে। সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, কোথাও জল জমতে দেবেন না।’’ কলকাতার ১২টি ডেঙ্গিপ্রবণ ওয়ার্ডে বিশেষ নজর রেখেছে পুরসভা। সেই ওয়ার্ডগুলি হল: ৬, ২৬, ৫৩, ৫৯, ৬৯, ৭৪, ৮৩, ৯৩, ৯৪, ১১২, ১১৭ এবং ১২১।
পুরসভার ১৬টি বরোর মধ্যে ১, ৬, ৭, ৮ ও ১০ নম্বর বরো চিন্তায় রেখেছে পুর স্বাস্থ্য বিভাগকে। এক নম্বর বরোর ছ’নম্বর ওয়ার্ডে, কাশীপুরের দিলারজঙ্গ রোডে সম্প্রতি বেশ কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। কাউন্সিলর সুমন সিংহ বলেন, ‘‘দিলারজঙ্গ রোডে তালাবন্ধ দু’টি গুদামে মশার লার্ভা জন্মেছে। পুরসভা মালিকদের আইনি নোটিস পাঠিয়েছে।’’
সাত নম্বর বরোয় পার্ক সার্কাস সংলগ্ন গোবরার অবিনাশ চৌধুরী লেন, আট নম্বর বরোয় কালীঘাটের আহিরীপুকুর রোড, কালী টেম্পল রোড ও গুরুপদ হালদার রোড এবং দশ নম্বর বরোয় রহিম ওস্তাগর রোড ও যোধপুর পার্কে ডেঙ্গিতে সর্বাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত শনিবার পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে পুর স্বাস্থ্য বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সপ্তাহে পাঁচ দিন প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচার চালানো হচ্ছে। সকলে যাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন, কোনও ভাবেই জল জমতে না দেন, জ্বর হলে নিকটবর্তী পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করান, তার জন্য মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য নিচ্ছেন।