ফাইল চিত্র।
এক দিনে পঞ্চাশ শতাংশ বেড়ে গেল করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। যা দেখে আতঙ্কিত চিকিৎসক মহল। মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার সারা দেশে করোনার এই বৃদ্ধি কি তবে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাকেই সত্যি করতে চলেছে?
সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে এ রাজ্যেও। পিছিয়ে নেই কলকাতাও। কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে গত ২৬ মে শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা (১৫৩৪) শীর্ষে ছিল। ৫ জুন ছিল ৫৭৯। ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। ১২ জুলাই সংক্রমিতের সংখ্যা কমে হয় ৩৪। জুলাই পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় করোনা আক্রান্তের দৈনিক সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। অগস্টের শুরু থেকে তা ফের ঊর্ধ্বমুখী। ২৪ অগস্ট কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হন ১০৭ জন। ২৫ অগস্ট ৯৪ জন।
চিকিৎসকেরাও মানছেন, সংখ্যার এই বৃদ্ধি অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। সামনে উৎসবের মরসুম আসছে। কারণে-অকারণে রাস্তায় ভিড় বাড়ছে। এখন মাস্ক ছাড়া বেরোনো কোনও মতেই উচিত নয়। সংক্রমণ বৃদ্ধির হার দেখে এখন থেকেই খুব সতর্ক থাকতে হবে, বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই। তাঁর পরামর্শ, ‘‘সংক্রমণের এই বৃদ্ধির হারকে অবজ্ঞা করা মানেই বিপদ। এখন রাস্তাঘাটে মাস্কহীন ভিড় দেখা যাচ্ছে। এই প্রবণতা বাড়তে থাকলে সকলকে ভুগতে হবে। কমে গিয়েছে ঘন ঘন হাত ধোয়ার রীতিও।’’ দেশে এক দিনে যে হারে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এখন বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন। মাস্ক থাকলেও তা তাঁদের থুতনিতে ঝুলে থাকছে। মাস্ক না পরাই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।’’
পালমোনোলজিস্ট অনির্বাণ নিয়োগী জানাচ্ছেন, ‘‘সংক্রমণের বড় ক্ষতি আটকাতে আমাদের দ্রুত করোনার প্রতিষেধক নিতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। না হলে নিজের সঙ্গেই ডেকে আনা হবে পরিবারের বিপদ।’’
কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকেরা মানছেন, বিভিন্ন বরো এলাকায় দুয়ারে সরকারের শিবিরে ভিড় হচ্ছে। সেখানে বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ছাড়া আসছেন। শারীরিক দূরত্ব কোনও ভাবেই মানা হচ্ছে না। প্রতিটি শিবিরের আয়োজকদের সে দিকে কড়া নজর রাখতে হবে।
সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পেয়ে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের আবেদন, ‘‘সবাই মাস্ক পরে বেরোবেন। ঘন ঘন হাত ধোবেন। নিকটবর্তী কেন্দ্র থেকে করোনার প্রতিষেধক নিয়ে নিন। না হলে সমূহ বিপদ।”