Coronavirus in Kolkata

কলকাতার অবস্থা উদ্বেগজনক, বহু এলাকা নিয়েই চিন্তায় পুরসভা

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলগাছিয়া, বেলেঘাটা, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজের মতো কিছু জায়গায় পরিস্থিতি খুব একটা সন্তোষজনক নয়।

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ২০:০২
Share:

কলকাতার একটি এলাকায় কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

করোনায় জর্জর কলকাতা। সংক্রমণের নিরিখে রেড জোন তো বটেই, শহরের ভিতরেই রয়েছে ৩১৯টি কন্টেনমেন্ট জোন! শুধু তাই নয়, তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হলেও সংক্রমণ কিন্তু বেড়েই চলেছে। এমনকি মৃত্যুও।

Advertisement

রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই কলকাতার অবস্থা টের পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর প্রতিদিনই মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করছে। আজ শুক্রবার অর্থাৎ ৮ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিসাব ধরলে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৬০ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতারই ১০৭ জন অর্থাৎ৬৬.৯ শতাংশ।স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে ওই ১৬০ জনের মধ্যে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সরাসরি করোনার কারণে। তার মধ্যে বাকি ৭২ জনের মৃত্যুর কারণ কো-মরবিডিটি। পরিসংখ্যান বলছে, এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র করোনাতেই কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের অর্থাৎ ৬২.৫ শতাংশ। শহরে বাকি ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে কো-মর্বিডিটির কারণে।শুধু তাই নয়, গোটা রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত এই মুহূর্তে পর্যন্ত ১ হাজার ১৯৫ জন। তার মধ্যে কলকাতাতেই ৫৭২ জন। অর্থাৎ এই শহরেই রাজ্যের মোট সক্রিয় করোনা রোগীর ৪৭.৯ শতাংশ রয়েছেন। সরকারি তথ্যবলছে, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ৩১৯টি কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে। তার মধ্যে ১ থেকে ৯ নম্বর বরোয় ২৫৪টি এবং ১৫ নম্বর বরোয় ২৭টি কন্টেনমেন্ট জোনে সব থেকে বেশি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি।

এ হেন কলকাতায় করোনা মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে?

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কলকাতা পুরসভায় এই মুহূর্তে কোনও মেয়র নেই। শুক্রবার থেকেই দায়িত্ব নিয়েছে প্রশাসক বোর্ড। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান সদ্য প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিমই। তিনি বলছেন, ‘‘রাতে ঘুম আসছে না। চেষ্টা চালাচ্ছি, কী ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।’’তিনি আরও জানান, পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ। ভোট হয়নি। অথচ শহরে করোনার দাপট। এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থাকতেই প্রশাসক বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ফিরহাদের দাবি, যে সমস্ত এলাকায় কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে, সেখানে মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হচ্ছে। এমনকি মোবাইল অ্যাম্বুল্যান্স এলাকায় নিয়ে গিয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের লালারস সংগ্রহের উপরে।যাঁদের উপসর্গ রয়েছে তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোভিড-১৯ টেস্টের কথা বোঝানো হচ্ছে। এ কাজে পুরকর্মী-স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও নিয়োগ করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকও।প্রাক্তন কাউন্সিলর থেকে বরো চেয়ারম্যানদের এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: এ বছর দেশের আর্থিক বৃদ্ধি হবে ০%, আরও ভয়াবহ পূর্বাভাস মুডিজ-এর​

আরও পড়ুন: ১০০ মাইল হাঁটার ক্লান্তিতেই কালঘুম, রেললাইনে পড়ে রইল বাসি রুটি​

পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, ডেপুটি মেডিক্যাল অফিসাদের ওই বরোগুলিতে সপ্তাহে তিন দিন করে বসতে বলা হয়েছে। কী ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে, তার একটি রিপোর্ট করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। একই সঙ্গে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলগাছিয়া, বেলেঘাটা, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ, সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ, মহম্মদ আলিপার্ক, কসবা, তপসিয়ার মতো কিছু জায়গায় পরিস্থিতি খুব একটা সন্তোষজনক নয়। পুরসভার সদ্য প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা বর্তমান প্রশাসক বোর্ডেরসদস্য অতীন ঘোষ বলেন, “মানুষকে বোঝাতে হবে, যাতে তাঁরা ঘরে থাকেন। পাশাপাশি ১০টি বরোয় বেশি করে টেস্টিংয়ের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement