ফাইল চিত্র।
গত শুক্রবার রাতে বালিশের তলায় সোনার দুল জোড়া খুলে রেখে ঘুমোতে গিয়েছিলেন তরুণী মা। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, একটা দুল নেই! কী ভাবে এমনটা হল, কেউ কি চুরি করল— সাত-পাঁচ ভেবেও কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি। এ দিকে, ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে একটানা কেঁদেই যাচ্ছিল তাঁর এক বছর দশ মাস বয়সি কন্যাসন্তান। কিছু খেতেও চাইছিল না সে। দীর্ঘক্ষণ পরে মায়েরই সন্দেহ হয়, ‘মেয়ে একটা দুল খেয়ে ফেলেনি তো!’
সম্প্রতি কাটাছেঁড়া না করেই নদিয়ার বাসিন্দা ওই শিশুর খাদ্যনালি থেকে সোনার দুলটি বার করে তার প্রাণ বাঁচিয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সূত্রের খবর, গত শনিবার সকালে শিশুটিকে এন আর এসের নাক-কান-গলা বিভাগে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। নিজেদের সন্দেহের কথা বলার পাশাপাশি চিকিৎসকদের অপর একটি দুল দেখান। এক্স-রে করে দেখা যায়, শিশুর খাদ্যনালিতে কিছু একটা আটকে রয়েছে, যা দেখতে দুলটির মতোই। তখন সকলে নিশ্চিত হন, আগের রাতে কোনও ভাবে সেটি গিলে ফেলেছিল শিশুটি।
এর পরেই তড়িঘড়ি ‘ইসোফ্যাগোস্কোপি’ করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। সে দিনই দুপুরে শিশুটিকে অজ্ঞান করে তার খাদ্যনালিতে পাইপ ঢুকিয়ে ‘ফরসেপ’ দিয়ে ইএনটি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুমন্ত দত্ত, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রণবাশীষ বন্দোপাধ্যায়, অর্পিতা মহান্তি, সায়ন্তন রায়, টি প্রুস্টি ও অ্যানাস্থেটিস্ট মধুরিমা রায়ের দল দুলটি বার করেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুটির খাদ্যনালি অত্যন্ত পাতলা এবং সেখানে ছুঁচলো দুলটি আটকে ছিল। অত্যন্ত সূক্ষ্ম ভাবে তা বার করে আনা যথেষ্ট ঝুঁকির ছিল। সোমবার শিশুটির রাইলস টিউবও খুলে দেওয়া হয়েছে।