—ফাইল চিত্র।
অগ্নি-সুরক্ষার আয়োজন যথেষ্ট। তবে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে প্রতি পদে। ফলে বইমেলায় অগ্নি-সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বইপ্রেমীরা। যদিও পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নি-সুরক্ষা ও নজরদারি রয়েছে বলে দাবি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড এবং দমকলের।
উদ্যোক্তারা জানান, প্রতিটি স্টলে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র, একাধিক দমকলের ইঞ্জিন, মোটরবাইক চড়ে দমকলকর্মীদের নজরদারি— সবটাই দমকলের কন্ট্রোল রুম থেকে পরিচালিত হচ্ছে। দমকল দফতরের স্টল থেকেও আগুন নেভাতে যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে প্রচার চলছে। যদিও এ সবে সন্তুষ্ট নন বইপ্রেমীরা। ঘটনাচক্রে বইমেলার দ্বিতীয় দিনেই ৪ নম্বর গেটের কাছে একটি স্টলের দেওয়ালের পাশে থাকা ফিডার বক্স থেকে স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছিল। তার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
হাওড়ার বাসিন্দা রমেন আদকের কথায়, ‘‘১৯৯৭ সালে ময়দানে বইমেলায় আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সেই তুলনায় অগ্নি-সুরক্ষা বাড়ানো হলেও তা ত্রুটিমুক্ত নয়।’’
বইমেলা জুড়ে বিদ্যুতের তার, কেবল ছড়িয়ে রয়েছে। ব্ল্যাকটেপ দিয়ে তার জোড়া। অনেকেরই অভিযোগ, সেগুলি ঢাকা নয়। বিভিন্ন স্টলের প্রায় গায়ে গায়ে থাকা খোলা ফিডার বক্স। রিং রোডের ধার থেকে শুরু করে একাধিক প্রেক্ষাগৃহের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের বাইরের অংশ স্টলের সামনে রাখা। ফিডার বক্সে কিংবা এসি মেশিনে শর্ট সার্কিট হলে বা জল ঢুকে গেলে বিপদ ঘটতে পারে বলেই আশঙ্কা বইপ্রেমীদের।
মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা শুভেন্দু বণিকের কথায়, ‘‘মোটরবাইক নিয়ে দমকলকর্মীরা রিং রোড ধরে যাতায়াত করলেও ভিড়ের মধ্যে সর্বত্র ঘোরা মুশকিল। কোনও সমস্যা হলে দ্রুত সেখানে পৌঁছনো সময় সাপেক্ষ। তত ক্ষণে বই এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থ পুড়ে যেতে পারে।’’
অনেকের প্রশ্ন স্টলের বাইরে রাখা সিল করা অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র প্রকাশনা সংস্থার লোকজনও কি আদৌ ব্যবহার করতে জানেন? বিভিন্ন স্টলের লোকজনের কারও কারও দাবি, তাঁরা ওই অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। কেউ আবার জানালেন পারেন না। যদিও গিল্ড সূত্রের খবর, অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র চালানোর জন্য কর্মী রাখা রয়েছে। তাঁরা দফায় দফায়
নজর রাখছেন।
স্টল তৈরির সময়ে ছাউনি তৈরির ক্ষেত্রে ত্রুটি ছিল। তা গিল্ড কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছিলেন। ফলে ফের বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে জল চুঁইয়ে পড়লে বিপদের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। যা দ্বিতীয় দিনেই বৃষ্টির সময়ে হয়েছে।
বইমেলায় দায়িত্বে থাকা দমকলের এক আধিকারিক জানান, কেব্ল থেকে বিপদ এড়াতে যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা মেলার প্রতিটি দিকে সিসি ক্যামেরা, পুলিশ,
দমকল এবং গিল্ডের কর্মীরা নজর রাখছেন। দমকলের ডিজি জগমোহন জানান, বইমেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বৈদ্যুতিক তারের বিষয়টি ফের খতিয়ে দেখা হবে।
গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে জানান, স্টল মালিকদের জন্য অগ্নিবিমারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে সেই বিমা করতে হবে। দমকলের সঙ্গে প্রতি পদে কথা বলে অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার দ্বিতীয় দিনে
শর্ট সার্কিট থেকে স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছিল। দ্রুত দমকলকর্মীরা তা নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন।