ফাইল চিত্র।
করোনার প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ়ের আকাল প্রায় সর্বত্রই। যার জেরে হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন শহরবাসী। কিন্তু প্রতিষেধক মিলছে না। এ দিকে, প্রতিষেধক নেওয়ার নির্দিষ্ট দিন বেঁধে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তা-ও আবার বিশেষ তালিকাভুক্ত (পরিবহণকর্মী ও হকার) ব্যক্তিরাই এখন সপ্তাহে পাঁচ দিন প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় পাবেন।
সমাজের সব শ্রেণির মানুষ কোভিড প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় আর কত দিনের মধ্যে পেতে
পারেন, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনও ধারণা নেই রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রতিষেধক পেলে সকলকেই তা দেওয়া হবে। কিন্তু তা না-পেলে
আমাদের তো অগ্রাধিকারের নিয়মই মানতে হবে।’’
বুধবার কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এখন শুধু পরিবহণকর্মী ও হকারদের ১৪৬টি প্রতিষেধক কেন্দ্র থেকে
কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার প্রতিষেধক নিতে উত্তর কলকাতার টালা এলাকার একটি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন ব্যবসায়ী রমেন ঘোষ। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এখন তাঁদের
প্রতিষেধক দেওয়া হবে না। রমেনবাবুর কথায়, ‘‘করোনা যে ভাবে ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে, তাতে প্রতিষেধক নেওয়াটা খুব জরুরি। কিন্তু কবে পাব, জানি না।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, ১৪৪টি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন রোজই সকালে অফিস খুললে প্রতিষেধক নিতে ভিড় করছেন মানুষ। দক্ষিণ কলকাতার একটি বরোর এগজিকিউটিভ হেলথ অফিসারের কথায়, ‘‘মানুষ এই মুহূর্তে খুবই অসহায়। অনেকেই এসে প্রতিষেধকের খোঁজ করে তা না-পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’’
অভিযোগ, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না মিললেও শহরের কিছু নামী বেসরকারি হাসপাতালে মোটা টাকা দিলে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় মিলছে। প্রশ্ন উঠেছে, এক দিকে যখন সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে, প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ়ের অভাব রয়েছে, তখন বেসরকারি হাসপাতালে তা
মিলছে কী ভাবে? তা হলে কি এ ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ নেই? এর উত্তরে রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বলেন, ‘‘প্রতিষেধক সংক্রান্ত বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। ওরা সরাসরি সিরাম ও ভারত বায়োটেক থেকে প্রতিষেধক কিনে নেয়।’’ কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতিষেধক দেওয়ার যাবতীয় পরিকাঠামো আমাদের প্রস্তুত। শুধু প্রতিষেধকের অভাবে তা সকলকে দেওয়া যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত প্রতিষেধক এলে সকলেই তা পাবেন।’’