—ফাইল চিত্র।
আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে ময়দানের ফুটবলে দাপট শুরু নাইজিরীয়দের। চলতি বছরের প্রিমিয়ার ডিভিশনেও দুই প্রধান-সহ প্রায় সব দলেই নাইজিরীয় ফুটবলারেরা আছেন। আর এ বার সংশোধনাগারের ফুটবলেও দাপট দেখাচ্ছেন আফ্রিকানরা।
এঁদের কেউ মাদক পাচারে অভিযুক্ত হয়ে সংশোধনাগারে এসেছেন, কেউ বা ভিসার মেয়াদ ফুরোনোর কারণে গ্রেফতার হয়েছিলেন, আবার কারও বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা চলছে। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে থাকা তেমনই নাইজিরীয়-সহ আফ্রিকান ফুটবলারেরা রয়েছেন সংশোধনাগারের বিভিন্ন ফুটবল দলে।
এক সময়ে প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আবাসিকদের নিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা হত। নানা টানাপড়েনে গত কয়েক বছর তা আটকে ছিল। সব জট কাটিয়ে অবশেষে প্রতিযোগিতা
শুরু হয়েছে। আটটি দলের এই প্রতিযোগিতায় সবে মাত্র গ্রুপ লিগের খেলা চলছে। লিগ পর্বের পয়েন্টের বিচারে চারটি দল সেমিফাইনাল খেলবে। প্রতিটি দলে রয়েছেন ন’জন ফুটবলার। তাঁদের মধ্যে গড়ে দু-তিন জন করে আফ্রিকার ফুটবলারের উপস্থিতি নজরে পড়ার মতো। নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে প্রত্যেকটি ম্যাচেই থাকছেন সংশোধনাগারের বাইরের রেফারি।
আটটি ভিন্ন রঙের জার্সি গায়ে মাঠে নামছে অ্যাভেঞ্জার্স, গ্যালাক্সি সুপ্রিম, রয়াল বেঙ্গল টাইগার্স, ব্লু-বার্ড, জাগুয়ার। রয়েছে সুপার এবং জেলার একাদশ নামেও দু’টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। নিয়মিত সংশোধনাগারের ভিতরে হিলারি, থমাস, ড্যানিল, অ্যানোজি, কেনেথদের মতো আফ্রিকানদের সঙ্গে দাপিয়ে অনুশীলন করেন রাজা, কাদেররাও। সে ভাবেই ম্যাচও শুরু করছেন তাঁরা। তবে এক কারা কর্তার কথায়, ‘‘সবে মাত্র গ্রুপ পর্যায়ের খেলা শুরু হয়েছে। যত দিন এগোবে ততই এই সব খেলোয়াড়দের
ড্রিবল, পাসের ঝলকের সাক্ষী থাকবেন অন্য আবাসিকেরা।’’
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্ত কাদের খান এখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। তাঁর নেতৃত্বে মাঠে নামছে অ্যাভেঞ্জার্স। এই সংশোধনাগারে রয়েছেন ২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটের দিন গিরিশ পার্কে সাব-ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডলকে গুলি চালনার ঘটনায় অভিযুক্ত রাজা শর্মাও। তাঁর নেতৃত্বে মাঠে নামবে গ্যালাক্সি। কাদের এবং রাজার ক্রিকেট ঝলকানি ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষ করেছে প্রেসিডেন্সির আবাসিকেরা। এ বার তাঁরা
ফুটবলেও দাপট দেখাবেন বলে আশা কারা কর্তাদের।
গ্রুপ লিগের জন্য প্রতিদিনই একটি করে ম্যাচ রয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর ফাইনালের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। কয়েকটি ম্যাচের জন্য এত দিনের প্রতিযোগিতা কেন? সে প্রসঙ্গে এক কারা কর্তার বক্তব্য, ‘‘যত বেশি দিন খেলানো যাবে, তাতে অনেক আবাসিককে অর্ন্তভুক্ত করা যাবে। সেই কারণে বেশি দিন ধরে ম্যাচ রাখা হয়েছে।’’ প্রতিযোগিতা শেষে ব্যক্তিগত পুরস্কার এবং ট্রফিরও ব্যবস্থা থাকছে। যদিও সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ কারা কর্তারা। বরং তাঁরা ময়দানের মতো সংশোধনাগারে আফ্রিকান শক্তির ফুটবলেই এখন বেশি ভরসা করতে চান।