আনন্দপুর কাণ্ডে নির্যাতিতার বয়ান ঘিরে ধোঁয়াশা। —নিজস্ব চিত্র
আনন্দপুরে চলন্ত গাড়িতে মহিলার শ্লীলতাহানির ঘটনা এবং উদ্ধারকারীকে পিষে পালানোর ঘটনায় ফের নতুন মোড়। ঘটনার পর অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পারলেও, ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় কেটে গেলেও অধরা মূল অভিযুক্ত অভিষেককুমার পান্ডে। কিন্তু পূর্বপরিচিত হওয়া সত্ত্বেও কেন ওই মহিলা পুলিশের কাছে অভিযুক্তের অন্য নাম বলেছিলেন, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিষেকের মায়ের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বছর পাঁচেক আগে ভিন রাজ্যের এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় অভিযুক্তের। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আদতে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা এই তরুণীর সঙ্গে সম্প্রতি তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মা দাবি করেছেন যে তাঁর ছেলে নির্যাতিতার বাড়িতেও যাতায়াত করতেন। আর এখানেই সংশয় তৈরি হয়েছে তদন্তকারীদের। তা হলে কেন ওই তরুণী পুলিশের কাছে এই সমস্ত তথ্য গোপন করেছেন? এ প্রসঙ্গে এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘নির্যাতিতা জেনে শুনেই ভুল নাম বলেছিলেন অভিযুক্তের। তিনি জানতেন, অভিযুক্তের নাম অভিষেক পান্ডে। কিন্তু পুলিশকে তিনি অভিযুক্তের নাম অমিতাভ বসু বলে বিভ্রান্ত করেছেন। তিনি জানতেন অভিযুক্তের গাড়ির নম্বরও। সেটাও তিনি পুলিশকে দেননি।” কেন এটা করলেন নির্যাতিতা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অভিষেকের হদিশ পেতে তাঁর মাকে লালবাজারে ডেকে পাঠান তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত শহরেই গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন অভিষেক। লুকিয়ে ছিলেন কলকাতার একটি হোটেলে। গতকালই তিনি শহর থেকে চম্পট দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: আনন্দপুর-কাণ্ডে মিলল গাড়ির খোঁজ, আরও ঘনীভূত রহস্য
আরও পড়ুন: দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর পরেই সুশান্ত কেন নষ্ট করেন হার্ড ডিস্ক, ফোন করেন আইনজীবীকে?
তদন্তকারীদের কাছে অভিযুক্তের মা দাবি করেছেন, নির্যাতিতা তরুণীর সঙ্গেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল অভিযুক্তের। সেই বক্তব্য কতটা ঠিক তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সব কিছুর পরও আনন্দপুর থানার তদন্তকারীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বর্তমানে এই তদন্তে সহযোগিতা করছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও। তাঁদের একাংশের ইঙ্গিত, শনিবার রাত থেকেই যদি আনন্দপুর থানার পুলিশ গাড়িটি চিহ্নিত করতে সক্রিয় হত তা হলে পালানোর সুযোগ পেতেন না অভিযুক্ত। কেন তদন্তের প্রথম দিকে পুলিশের এই ঢিলেমি? যদিও ঢিলেমির কথা ভিত্তিহীন বলে দাবি আনন্দপুর থানার আধিকারিকদের। তাঁদের দাবি, তরুণী বিভ্রান্ত করায় দেরি হয়েছে তদন্তে।