এই গাড়ির ধাক্কাতেই দু’জনের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। ফাইল চিত্র
শেক্সপিয়র সরণিতে বেপরোয়া জাগুয়ার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল দুই বিদেশি নাগরিকের। সেই ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়ায় কলকাতার নগর দায়রা আদালতে নতুন সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ করল লালবাজার। শুক্রবার জাগুয়ার-কাণ্ডে অভিযুক্ত রাঘিব পারভেজের জামিনের বিরোধিতা করে সওয়ালও করেছেন নতুন কৌঁসুলি। শনিবার নগর দায়রা আদালত রাঘিবের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। পুলিশের খবর, সন্দীপ ভট্টাচার্য নামে ওই আইনজীবীকে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি ওই আদালতের সরকারি প্যানেলভুক্ত ছিলেন না। যদিও গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে এ ধরনের পদক্ষেপের উদাহরণ রয়েছে। কামদুনি মামলাতেই এ ভাবে বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ করেছিল পুলিশ।
তবে পুলিশ ও সরকারি কৌঁসুলিদের একাংশ কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে সম্প্রতি রেড রোড-কাণ্ড ও গিরিশ পার্কে পুলিশের গুলিবিদ্ধ হওয়ার মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টানছেন। তাঁরা বলছেন, রেড রোডে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে গুরুতর অপরাধের প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। গিরিশ পার্কের ঘটনাতেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হয়নি। পুলিশের খবর, ওই দু’টি মামলার রায়ের পরে লালবাজারের কর্তারা আইন দফতরের ‘লিগ্যাল রিমেমব্রান্স’-এর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে প্যানেলের বাইরে থাকা ওই আইনজীবীকে জাগুয়ার কাণ্ডের জন্য বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ করেন।
নতুন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগের ক্ষেত্রে লালবাজারের সরকারি স্তর থেকে নির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। এই নিয়োগকে ‘রুটিন প্রক্রিয়া’ হিসেবেই দেখছেন পুলিশকর্তারা। তবে এ ক্ষেত্রে নগর দায়রা আদালতে কিন্তু ভিন্ন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ করার আগে ওই আদালতের মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেননি পুলিশ আধিকারিকেরা। তমালবাবুও বলছেন, ‘‘আমার অজান্তেই এই নিয়োগ হয়েছে।’’ মুখ্য সরকারি কৌঁসুলির ‘অজান্তে’ নিয়োগ নিয়ে ‘ক্ষুব্ধ’ সরকারি কৌঁসুলিদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি এবং সরকারি প্যানেলে থানা বরিষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা না-বলে নিয়োগ পক্ষান্তরে তাঁদের কাছে অপমানজনক। এই নিয়োগ
নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুক্রবার নগর দায়রা আদালতের সরকারি কৌঁসুলিদের কয়েক জন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) মুরলীধর শর্মার সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিযোগ জানান। কৌঁসুলিদের একাংশের দাবি করেন, ওই পুলিশকর্তা তাঁদের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি পুরো বিষয়টি দেখবেন। কোনও সমস্যা থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।