হুড়োহুড়ি: মেট্রোয় ওঠার জন্য যাত্রীদের ঠেলাঠেলি। এসপ্লানেড স্টেশনে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ
পুজোর ভিড়ে ভোগাতে পারে মেট্রো।
দিন কয়েক আগেই মেট্রোর আধিকারিকদের বড় অংশ আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, পুজোয় যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে দু’টি নতুন রেক নামানো হবে। কিন্তু তাঁদের সেই আশায় মঙ্গলবার জল ঢেলে দিলেন স্বয়ং কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি সি শর্মা নিজেই। এ দিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়ে দেন, নতুন বাতানুকূল রেক অক্টোবরে নামানো হবে। তবে তা পুজোর আগে নয়। ফলে উৎসবের দিনগুলোয় মেট্রোয় ভিড়ের বহর ও রেকগুলির নির্ধারিত সময়ে যাতায়াত নিয়ে সন্দেহ থেকেই গেল।
এ দিন জিএম বলেন, ‘‘আগামী নভেম্বরের মধ্যে দিনে মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যা ৩০০ করা হবে। চলতি মাসে চালু হবে আরও দু’টি নতুন এসি রেক।’’ সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দেন, তবে নতুন রেক পুজোর আগে নামানো হচ্ছে না। যদিও মেট্রো সূত্রের খবর, চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে দু’টি নতুন এসি রেক তৈরি অবস্থায় ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসে পৌঁছছে। তবে পুজোর সময়ে সেগুলি নামাতে ভরসা পাচ্ছেন না মেট্রোকর্তারা।
সূত্রের খবর, পুজোর আগেই সোমবার থেকে যে পরিমাণ ভিড় মেট্রোয় উপচে পড়তে শুরু করেছে, সেই কারণেই নতুন রেক নামাতে চাইছেন না কর্তৃপক্ষ। অতএব দুর্গাপুজোয় মেট্রো সফরে যাত্রী- স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বেশ কিছু দিন ধরেই সময়সূচি মেনে মেট্রো চলছে না বলে অভিযোগ করতে শুরু করেছেন নিত্যযাত্রীদের অনেকেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেতাজি ভবন স্টেশনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল নির্ধারিত সময়ের ট্রেন স্টেশনে এল কয়েক মিনিট দেরিতে। তত ক্ষণে ভিড় থিকথিক স্টেশন চত্বর। যাত্রীদের দাবি, বিভিন্ন স্টেশনে পরপর মেট্রোর ঘোষণা চললেও কোনও ট্রেনই সময়ে চলছে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে প্রাক-পুজোতেই যদি এই অবস্থা হয়, তবে উৎসবের চার দিন কী হবে? এর মধ্যেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, সব ধরনের পরিস্থিতি সামালাতে তাঁরা প্রস্তুত।
সোমবার সারা দিনে মেট্রোয় যাত্রীসংখ্যা ছিল ৮ লক্ষ ৪৫ হাজার। মঙ্গলবারও ভিড়ের পরিমাণ প্রায় একই রকম ছিল। গত বছর শুধু ষষ্ঠীর দিনে মেট্রোয় ৯ লক্ষ ৭ হাজার যাত্রী হয়েছিল। মেট্রোর ধারণা, সেই সংখ্যা এই বার ১০ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলতে পারে। তার উপরে টালা সেতু বন্ধ হওয়ায় দমদম মেট্রো স্টেশনের যাত্রীসংখ্যা কার্যত দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। যাত্রী বেড়েছে নোয়াপাড়া এবং বেলগাছিয়াতেও।
পুজোয় অবশ্য যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করছে মেট্রো। সূত্রের খবর, পুজোয় ভিড় সামলাতে প্রয়োজনে প্ল্যাটফর্মে ঢোকার গেট বন্ধ রাখা হতে পারে। নিরাপত্তাকর্মী এবং পুলিশকেও তৈরি রাখা হবে যে কোনও ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য। মেট্রোর কন্ট্রোল রুম ছাড়াও লালবাজার ও স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনের ছবি সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাবে।