প্রতীকী ছবি।
কোভিডে যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের দেহ সৎকারের জন্য ধাপায় নতুন একটি কেন্দ্র খুলছে সরকার। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সেটি চালু হয়ে যাবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে জানুয়ারির পরে কোভিডে মৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশেরই দাহকাজ হবে ওই নতুন কেন্দ্রে।
এই মুহূর্তে কলকাতায় নিমতলা শ্মশান ছাড়া গার্ডেনরিচের বিরজুনালা এবং ধাপায় কোভিড আক্রান্তদের দেহ সৎকারের কাজ চলছে। ধাপায় যেখানে সৎকার হচ্ছে, সেটি আদতে অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহ সৎকারের কেন্দ্র। সেখানে ওই দেহগুলির পাশাপাশি কোভিডে মৃতদেরও সৎকার হচ্ছে। ফলে অনেক সময়েই লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। হাসপাতালে জমে থাকছে দেহ।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ধাপায় এখন যে চুল্লি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেখানে একটি করে দেহ সৎকারের সুযোগ রয়েছে। এই ব্যবস্থায় কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। তাই নতুন দু’টি চুল্লি তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি চুল্লিতে একসঙ্গে পাশাপাশি দু’টি দেহ সৎকারের সুবিধা থাকবে। অতীনবাবুর কথায়, “সাধারণ শ্মশানেও কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকার করা যায়। কারণ বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, কোভিডে আzক্রান্ত হওয়ার পরে কেউ মারা গেলে সেই মরদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু এই বিষয়ে এখনও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা যায়নি। ফলে আলাদা পরিকাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে।”
কোভিড-দেহ নিয়ে নিয়মিত সৎকারের কাজ করছে নিমতলার একটি ক্লাব। তাদের তরফে দেবাশিস মহন্ত (বাপি) জানিয়েছেন, ধাপায় নতুন চুল্লি চালু হয়ে গেলে কোভিডে মৃতদের সৎকারের জন্য এক শ্মশান থেকে অন্য শ্মশানে ছুটতে হবে না। সাধারণ মৃতদেহ সৎকার করতে যাঁরা নিমতলায় আসেন, সেখানে কোভিড-দেহ সৎকার হওয়ায় এখনও তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। সেটাও কমবে। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে আক্রান্ত কেউ মারা গেলে তাঁর দেহ আত্মীয়দের হাতে দেওয়া হচ্ছিল না। পুরসভা বা স্থানীয় প্রশাসন সরাসরি দেহ নিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করছিল। কিন্তু তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এখন কোভিডে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দের শ্মশানে যেতে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে এক জনকে পিপিই পরে মরদেহ চুল্লিতে ঢোকানো পর্যন্ত পাশে থাকতে দেওয়া হচ্ছে। মৃত ব্যক্তির মুখ যাতে স্পষ্ট বোঝা যায়, তার জন্য বিশেষ ধরনের প্লাস্টিকের আবরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সৎকারের সময়ে হিন্দুদের যে নিয়ম পালন করার রেওয়াজ রয়েছে, তা হচ্ছে না। পুরসভা সূত্রের খবর, অন্য শ্মশানে যেমন মৃতের পরিজনেদের অপেক্ষা করার জন্য কিছু ন্যূনতম ব্যবস্থা থাকে, ধাপার নতুন সৎকার কেন্দ্রেও সেই ব্যবস্থা রাখা হবে।