আদিগঙ্গার উপরে এই সেতু ঘিরেই শুরু বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
কালীঘাটের আদিগঙ্গা পারাপারের জন্য সেচ দফতরের নির্মিত সেতু নিয়ে বিতর্ক উঠল।
পরিবেশকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ওই সেতুর জন্য বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে আদিগঙ্গার জলের প্রবাহ। তাঁদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে জোয়ারের সময়ে নদীর জলের স্রোত আটকে যাওয়ায় জল সেতুর উপরে উপচে উঠছে। জলের গতি বাধাপ্রাপ্ত হলে সামগ্রিক ভাবে নদীর সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কায় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘কালীঘাটের ওই সেতু আদিগঙ্গার স্রোতের প্রবাহকে ক্রমাগত বাধা দিলে নদীর স্রোত নষ্ট হবে। তাতে সামগ্রিক ভাবে নদীটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মূল গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে ওই নদীটিতে প্রত্যহ জোয়ার এবং ভাটা হয়। সেই কারণেই জলের প্রবাহ ঠিক রাখতে পরিবেশ আদালতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে পরিবেশ আদালত এই বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ দেয়নি।’’
বছর তিনেক আগে কালীঘাট মন্দিরের অদূরেই ‘সদর ঘাট’ লাগোয়া ওই সেতু তৈরি করে রাজ্য সেচ দফতর। সেতুটি আদিগঙ্গার উপরে কালীঘাট এবং চেতলার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম মাধ্যমে। পথচারীরা ছাড়াও সাইকেল এবং মোটরবাইকও ওই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শীত-গ্রীষ্মে সমস্যা না হলেও বর্ষাকালে জোয়ারের সময়ে আদিগঙ্গার জল সেতুর উপরে উঠে যায়। তখন সেতুর উপর দিয়ে হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।
সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, কংক্রিটের ওই সেতুটি ‘আর্চ’ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে। সেতু নির্মাণে আদিগঙ্গায় কোনও স্তম্ভ পোঁতা হয়নি। সেতুর প্ল্যাটফর্ম অনেক উঁচুতেই তৈরি করা হয়েছে। ফলে, সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে, অত্যাধিক বৃষ্টি হলে সেই সময়ে জল হয়তো সেতুতে উপচে পড়তে পারে। পরিবেশ আদালত এই বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি বলেও তাঁদের দাবি। এই সেতু নির্মাণের আগে কালীঘাটের আদিগঙ্গা পারপার করার জন্য নৌকা ব্যবহার করা হত। সেই কারণেই স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিতে ওই সেতু তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে টালিনালার উপরে করুণাময়ী সেতুর পাশে নব নির্মিত একটি সেতু তৈরিতে জলের প্রবাহ আটকানোর অভিযোগে পরিবেশ আদালত স্থগিতাদেশ জারি করেছে। সংশ্লিষ্ট জায়গায় জলের প্রবাহের কোনও ক্ষতি হচ্ছে কী না, তা জানতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে ‘রাইটস’ সংস্থাকে গিয়ে সমীক্ষাও করানো হয়েছে। পরিবেশ আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।