পরীক্ষামূলক কেন্দ্র এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ক্যানসার চিকিৎসকেরা। সেই লক্ষ্যে দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য পোর্টেবল আলট্রাসাউন্ড ডিভাইস ব্যবহারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পরীক্ষামূলক ভাবে সেটি করার কেন্দ্র হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালকে।
পোর্টেবল আলট্রাসাউন্ড ডিভাইসটি ছ’ইঞ্চির একটি যন্ত্র। যার সঙ্গে মোবাইল বা ট্যাবের সংযোগ করা থাকবে। ওই যন্ত্রটির মাধ্যমে সহজেই যে কোনও জায়গায় গিয়ে স্তন ক্যানসার চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামে গিয়েও বিভিন্ন শিবিরে মহিলাদের স্তনে টিউমার থাকলে সেটি ক্যানসার কিনা, তা সহজেই বোঝা যাবে ওই যন্ত্রের মাধ্যমে। পিজি-র স্তন ক্যানসার শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষা করতে রেডিয়োলজিস্ট লাগবে না। অন্য চিকিৎসকেরাই প্রশিক্ষণ নিয়ে তা ব্যবহার করতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘‘অন্য চিকিৎসকদের দিয়েও স্তন ক্যানসার চিহ্নিত করা যায়। তারই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে পিজি-কে বেছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।’’
দীপ্তেন্দ্র এবং আর এক ক্যানসার চিকিৎসক পার্থ বসু এই পরীক্ষামূলক গবেষণা এ রাজ্যে এনেছেন। প্রায় ১৩ মাস ধরে বিভিন্ন ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই পিজি-কে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত অনুমতি দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই যন্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণে পিজি ছাড়াও ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ, এম আর বাঙুর ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দু’জন করে চিকিৎসককে রাখা হয়।
দীপ্তেন্দ্র জানান, যন্ত্রটি দিয়ে পরীক্ষার পরে সেই তথ্য নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড হবে। তাতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময়ে পরীক্ষার গুণগত মানের দিকে নজর রাখবে ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার। রেডিয়োলজিস্ট নন, এমন কত শতাংশ চিকিৎসক ওই যন্ত্র দিয়ে রোগ নির্ণয় করলেন, তা-ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নজরে থাকবে। ২০২৫-এর শেষ পর্যন্ত এই গবেষণা চলবে। দীপ্তেন্দ্র জানান, এর পরে তথ্য পর্যালোচনা করে ওই যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।