ফাইল চিত্র।
শহরের ট্রাম-মানচিত্রে বিভিন্ন রুট চিহ্নিত করতে এ বার বিশেষ রং বা ‘কালার কোড’ চালু হচ্ছে। ইউরোপের একাধিক দেশের ট্রাম রুটে এই ব্যবস্থা চালু আছে। দিল্লি মেট্রোর বিভিন্ন রুটকেও পৃথক রং দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পরে ওই বিশেষ মানচিত্র ইন্টারনেট এবং অ্যাপের মাধ্যমে সকলের কাছে পরিচিত করে তোলা হবে। নির্দিষ্ট রুটের ট্রামেও ওই রঙের সঙ্কেত থাকবে। যাতে যাত্রীরা সহজেই রং দিয়ে আলাদা আলাদা রুট চিনে নিতে পারেন। রাজ্য পরিবহণ নিগমের আধিকারিকেরা দাবি করছেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরা ছাড়াও শহরের যাত্রীদের কাছেও ট্রামে সফর আরও সহজ হবে।
নতুন ব্যবস্থায় টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ রুটকে গোলাপি বা ‘পিঙ্ক লাইন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। টলি ক্লাব, ভবানী সিনেমা, লেক মার্কেট, দেশপ্রিয় পার্ক, হিন্দুস্থান পার্ক, গড়িয়াহাট ছুঁয়ে ছুটবে ওই রুটের ট্রাম। এর পরে গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড রুটটি চিহ্নিত করা হয়েছে হলুদ রং দিয়ে। সেটিকে বলা হচ্ছে ‘ইয়েলো লাইন’। কোয়েস্ট মল, পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়, রিপন স্ট্রিট, নোনাপুকুর, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড, চাঁদনি চক হয়ে ওই রুটে যাবে ট্রাম। আবার এসপ্লানেড থেকে বইপাড়ার ট্রাম রুটকে চিহ্নিত করা হচ্ছে লাল রং দিয়ে। ‘রেড লাইন’ বলা হচ্ছে ওই রুটকে। পুরনো কলকাতার অলিগলি ছুঁয়ে যাওয়া বিধাননগরগামী রুটের একটি অংশকে ‘ভায়োলেট লাইন’ বা বেগুনি লাইন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। হাওড়া সেতু থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রুটের নামকরণ হচ্ছে ‘গ্রিন লাইন’। চিৎপুর হয়ে চলা ওই লাইনের একটি অংশ ভায়োলেট লাইন এবং অন্যটি রেড লাইনের মধ্যে পড়ছে। এসপ্লানেড থেকে ময়দান ছুঁয়ে খিদিরপুর রুট, যা ৩৬ নম্বর রুট হিসেবে পরিচিত ছিল, সেটিকে বিশেষ গরিমাযুক্ত ‘ব্লু লাইন’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তবে, ওই রুট এখনও চালু হয়নি।
কলকাতা মেট্রো এখনও তাদের বিভিন্ন রুটকে এ ভাবে চিহ্নিত করতে পারেনি। যদিও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শহরেও একাধিক লাইনে ছুটবে মেট্রো। ট্রাম কর্তৃপক্ষের এই পরিকল্পনায় অভিনবত্ব দেখছেন অনেকেই। সম্প্রতি ট্রাম সফরকে গুরুত্ব দিতে ১০০ টাকার বিশেষ পাস চালু করা হয়েছে। তা ব্যবহার করে শহরের সব রুটে ট্রামে সফর ছাড়াও বাতানুকূল ট্রাম লাইব্রেরি এবং বিশেষ ট্রাম ‘পাটরানি’তে সফর করা যাবে। রাজ্য পরিবহণ নিগমের ডিরেক্টর রাজনবীর সিংহ কপূর বলেন, ‘‘বিশেষ রং দিয়ে চিহ্নিত রুট-সমন্বিত মানচিত্র সব ট্রামে রাখা থাকবে। নির্দিষ্ট রুটের ট্রামেও রঙের সঙ্কেত ব্যবহার করা হবে। এর ফলে যাত্রীদের কাছে ট্রাম চেনা সহজতর হবে। ট্রাম সফরে আরও মানুষকে আগ্রহী করে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য।’’
যদিও ট্রামের নিত্যযাত্রী এবং ট্রামপ্রেমীদের একাংশ বন্ধ থাকা রুট চালু করার উপরে জোর দিতে চান। রাস্তায় বেআইনি পার্কিং সরিয়ে ট্রামের রাস্তা পরিষ্কার করার কথা বলছেন তাঁরা। তাঁদের মত, রুট না বাড়লে নিছক রং দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।