কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।—ফাইল চিত্র।
উষসী সেনগুপ্তকে নিগ্রহের ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসল কলকাতা পুলিশ। নিজের থানার অধীন নয় বলে দায় এড়াতে চেয়েছিল ময়দান থানা। সেই অভিযোগ মাথায় রেখেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারের নয়া নির্দেশ, থানার জুরিসডিকশন দেখে নয়, অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নিতে হবে। রাতের শহরে বাইক বাহিনীর তাণ্ডব রুখতেও কড়া পদক্ষেপ করছে লালবাজার।
সোমবার রাতে কাজ সেরে উবরে করে বাড়ি ফেরার সময় এক বাইক আরোহীকে ধাক্কা মারলে চরম হেনস্থা হতে হয় প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া উষসী সেনগুপ্তকে। এক দল বাইক আরোহী তাঁকে গাড়ে থেকে টেনে নামানোর চেষ্টা করে। ময়দান থানায় গিয়ে সাহায্যের আর্জি জানালেও অভিযোগ, ওই থানার কর্তব্যরত অফিসার জানিয়ে দেন, ঘটনাস্থল তাঁর থানার সীমার মধ্যে পড়ে না। এক দিকে বাইক বাহিনীর তাণ্ডব এবং পুলিশের এই গা ছাড়া মনোভাব— দুইয়েরই মোকাবিলার দাওয়াই এ দিন দিয়েছেন কলকাতারা নগরপাল অনুজ শর্মা।
বুধবার লালবাজারে সব ডিসি, জয়েন্ট সিপিদের নিয়ে বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
ওই বৈঠকে ঠিক হয়, একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মেনে কাজ করতে হবে সব থানাকে। থানার জুরিসডিকশন ভেবে কাজ না করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একই সঙ্গে পুলিশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উপরও জোর দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাতে যত পুলিশকর্মী-অফিসার থাকেন, তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ থাকতে হবে। থানা এবং ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে রাতের শহরে নজরদারির বিষয়টি লক্ষ্য রাখবে। ট্রাফিক কন্ট্রোল এবং ওসি কন্ট্রোল এর মধ্যে সংযোগ থাকবে। রাতে থানার সিসিটিভি মনিটর করার জন্য আলাদা করে পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হবে। নাইট রাউন্ড অফিসারদের নজরদারি বেশি করতে হবে।
এই সব সিদ্ধান্তের কথা প্রতিটি থানাতেই লিখিত আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে লাল বাজার সূত্রে খবর। এর পরেও যদি কর্তব্যে গাফিলতির দেখা যায়, তা হলে দোষী পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
অন্য দিকে এই নির্দেশিকার পর বুধবার রাত থেকেই পার্কসার্কাস, মিন্টো পার্ক সহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় বাইক বিরোধী অভিযানে নেমেছে কলকাতা পুলিশ।