জটলা: সল্টলেক সেক্টর ফাইভে পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের ভিড়। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
করোনা অতিমারির মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এর মধ্যেই শনিবার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে হয়ে গেল হোটেল ম্যানেজমেন্টের সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। গত ২৭ অগস্ট সেক্টর ফাইভেই বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল। এ দিন হোটেল ম্যানেজমেন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে আসা কয়েক জন পরীক্ষার্থীর মতে, সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আরও সর্তক হলে ভাল হত।
যেমন, হলদিয়া থেকে পরীক্ষা দিতে আসা দেবকুমার দাস জানালেন, কর্তৃপক্ষ তাঁদের লিখিত নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছিলেন, মাস্ক পরে আসতে হবে ও সঙ্গে স্যানিটাইজ়ার রাখতে হবে। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, পরীক্ষার্থীরা যে মাস্ক পরে আসবেন, পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে তা ফেলে দিতে হবে। সেখানে নতুন মাস্ক দেওয়া হবে। দেবকুমার বলেন, ‘‘আমাদের কিন্তু নতুন মাস্ক দেওয়া হয়নি। যে মাস্ক পরে এসেছিলাম, সেটা পরেই পরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষার হলে ঢোকার সময়ে হাতে স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়েছিল। জুতো জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা অবশ্য ছিল। তবে হলের বাইরে স্যানিটাইজ় করার টানেল থাকলে নিশ্চিন্ত হতাম।’’ আর এক পরীক্ষার্থী তনিশা কয়াল বললেন, ‘‘গ্লাভসও দেবে বলেছিল। কিন্তু দেওয়া হয়নি। তবে পরীক্ষার হলে দু’জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ভালই ছিল।’’
পরীক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা দেওয়ার কম্পিউটার ও বসার জায়গা স্যানিটাইজ় করা ছিল বলেই তাঁদের জানানো হয়েছে। আর এক পরীক্ষার্থীর মা বলেন, ‘‘কতটা সামাজিক দূরত্ব মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা ভেবে চিন্তায় ছিলাম।’’
হলে ঢোকার সময়ে যাতে হুড়োহুড়ি না হয়, তার জন্য এক ঘণ্টা আগেই পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে যেতে বলা হয়েছিল। তবে পরীক্ষার শেষে বেরোনোর সময়ে কিছুটা ভিড় হয়েছিল বলে জানালেন কয়েক জন। পরীক্ষার্থীরা লাইন দিয়ে বেরোলেও হলের বাইরে রাস্তায় অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের জটলা তৈরি হয়েছিল। মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব।
পরীক্ষার্থীদের কয়েক জনের মতে, বর্তমানে প্রতিদিনই যখন এত মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন, তখন পরীক্ষা দিন কয়েক পরে হলেই ভাল হত। এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘এটা সর্বভারতীয় পরীক্ষা। ভিন্ রাজ্যের কোনও ভাল কলেজে সুযোগ পেলেও তো এখন সেখানে গিয়ে পড়তে পারব না। তা হলে কয়েক দিন পরে পরীক্ষা নেওয়াই যেত।’’
পরীক্ষার্থীদের এই সব অভিযোগের উত্তর অবশ্য ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর হোটেল ম্যানেজমেন্ট’-এর কোনও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মেলেনি। কর্তৃপক্ষের দেওয়া বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বর পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি নোটিসে দেওয়া ছিল। কোনও নম্বরই কেউ ধরেননি। কয়েকটি ফোন বন্ধ ছিল।