জাতীয় পরিবেশ আদালত।—ফাইল চিত্র।
নির্দেশ সত্ত্বেও রবীন্দ্র সরোবর নিয়ে রিপোর্ট জমা না দেওয়ায় রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত।
সরোবরে দূষণ হচ্ছে কি না, তার সার্বিক দেখভাল নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি আগেই তৈরি হয়েছিল। সেই কমিটি ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা নিয়ে নির্দিষ্ট রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য গত এপ্রিলেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু তার পরেও তা না হওয়ায় নিজেদের লিখিত নির্দেশে আদালত জানিয়েছে, ‘‘এটা আমরা বুঝতে পারছি না কেন রবীন্দ্র সরোবর নিয়ে বলা সত্ত্বেও মুখ্যসচিব কাজটি (রিপোর্ট জমা দেওয়া) না করে এড়িয়ে যাচ্ছেন!’’ আদালত উল্লেখ করেছে যে, এত দিনে শুধু রবীন্দ্র সরোবর দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) ‘হাউজিং সেক্টর’-এর ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের একটি ও সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের দু’টি রিপোর্ট জমা পড়েছে।
যদিও বৃহস্পতিবার রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘পরিবেশ আদালতের সব নির্দেশই মানা হবে।’’
গত সোমবারই পরিবেশ আদালতে সরোবর সংক্রান্ত মামলাটি উঠেছিল। মামলায় সরোবরে ছটপুজো বন্ধ করা নিশ্চিত করতে কলকাতা মেট্রোপলিটনকে ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (কেএমডিএ) নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পরিবেশকর্মীরা মনে করেন আদালতের লিখিত নির্দেশে সরোবর মামলাটি একটা আলাদা মাত্রা পেয়েছে। কারণ, ভর্ৎসনার পাশাপাশি আদালত এ-ও বলেছে, বিষয়টি নিয়ে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অর্থই হল নির্দেশ মান্য করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি! আদালতের ভাষায়, ‘আইনের শাসনই সর্বোচ্চ এবং সেটা রাজ্যকেই নিশ্চিত করতে হবে।’
নির্দেশ দেওয়ার পরেও গত বছর রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো হওয়ায় এমনিতেই ‘চাপে’ রয়েছে কেএমডিএ। কারণ, চলতি বছরেও যদি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়, তা হলে সংস্থাকে বড় জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন
সংস্থার আধিকারিকদের একটি বড় অংশ। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বারবার বলার পরেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে একটা গাফিলতি থাকায় আদালত এমনিতেই ক্ষুব্ধ। ফলে চলতি বছরে যেমন করেই হোক, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানতেই হবে।’’