শুক্রে সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ি। —প্রতীকী চিত্র।
শুক্রবার রাজ্যে সব সরকারি কর্মীর কাজে যোগদান বাধ্যতামূলক করল নবান্ন। প্রতিটি সরকারি ও আধা-সরকারি অফিসের জন্য এই নিয়ম কার্যকর থাকবে। শুক্রে কোনও সরকারি কর্মী পূর্ণদিবস বা অর্ধদিবস ক্যাজুয়াল লিভ নিতে পারবেন না। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্ন থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। যাঁরা বুধবার ছুটিতে ছিলেন, তাঁদেরও শুক্রবার কাজে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তবে যাঁরা ১৪ তারিখের আগে থেকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন তাঁদের এই কড়াকড়ির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। কোনও সরকারি কর্মী হাসপাতালে ভর্তি থাকলে কিংবা পরিবারে কোনও শোকের পরিস্থিতি থাকলে, তাঁদেরও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যাঁরা বুধবারের আগে যাঁদের মাতৃত্বকালীন ছুটি, সন্তান-পালন ছুটি, মেডিক্যাল লিভ কিংবা আর্নড লিভ অনুমোদন হয়ে রয়েছে, তাঁদেরও হাজিরা বাধ্যতামূলক নয়।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার এসইউসিআই-এর তরফে রাজ্যে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ‘বন্ধ-সংস্কৃতি’ নিয়ে এর আগেও একাধিক বার রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এ বারও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল, সরকারি কর্মীরা শুক্রবার কাজে যোগ না দিলে ওই দিনের বেতন কাটা যাবে। যাঁরা শুক্রবার অফিসে হাজিরা দেবেন না, তাঁদের শোকজ় করা হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। অনুমোদনহীন ছুটির কারণ জানিয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের। যাঁরা শোকজ়ের জবাব দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শ়ৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য পদক্ষেপও করা হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন। দোষীর ফাঁসির সাজার দাবি তুলেছেন তিনিও। বৃহস্পতিবার রাজভবনের বাইরে দাঁড়িয়েও আবারও সে কথাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে একই সঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন, বাংলায় কোনও বন্ধ হয় না। একে রাজ্যকে অচল করার জন্য বিরোধীদের একটি চক্রান্ত বলেই ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, এই প্রথম বার নয়, এর আগেও যখনই রাজ্যে কোনও বন্ধ ডাকা হয়েছে, মমতার সরকার তাতে আপত্তি জানিয়েছে।
এর আগে দুপুরেই নবান্ন থেকে অপর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বন্ধের কোনও প্রভাব রাজ্যে পড়বে না। পরিবহণ ব্যবস্থাও অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি পরিবহণ অপারেটরগুলির সঙ্গেও এ বিষয়ে সমন্বয় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সচিবকে।
যদিও এ বিষয়ে বাস মালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বন্ধ হল বাস মালিকদের কাছে শাঁখের করাতের মতো। বাস নামলে যাঁরা বন্ধ ডেকেছেন, তাঁরা বাসের ক্ষতি করতে পারেন। আবার বাস না নামলে, প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। এমন অবস্থায় বন্ধের দিন বাস রাস্তায় নামার পর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে, মালিকরা যাতে বিমা সংস্থার থেকে ঠিকঠাক ক্ষতিপূরণ পান সেটিও সরকারকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।