প্রতীকী ছবি।
কী চলছে ঝাঁ চকচকে অফিসের ভিতরে?
একাধিক প্রতারণার ঘটনা ঘটার পরে শিল্পতালুক তথা পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি অফিসগুলির অন্দরে খোঁজ নিতে চাইছে প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত। আধিকারিকেরা জানান, অনুমতি কিংবা লাইসেন্স নেওয়া হচ্ছে এক কাজের জন্য। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই দেশি-বিদেশি লোকজনকে প্রতারণা করার কারবার ফাঁদা হয়েছে বিভিন্ন অফিসে। ফলে এ বার শিল্পতালুকের অফিসগুলির সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে নবদিগন্ত।
সম্প্রতি পাঁচ নম্বর সেক্টরের ইএন ব্লকের একটি বহুতলে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, সেখানে আন্তর্জাতিক কল সেন্টারের একটি অফিসের আড়ালে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করার চক্র চলত। কোটি কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে বলেই দাবি পুলিশের। ওই ঘটনায় পাঁচ জন ভিন্ রাজ্যের নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেটি মুম্বইয়ের গ্যাং বলেই জানায় সাইবার বিভাগ। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা ব্যবসার কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। অথচ প্রায় দেড় মাস ধরে সংস্থাটি পাঁচ নম্বর সেক্টরে অফিস ভাড়া নিয়ে কাজ চালাচ্ছিল। অফিসটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
বিধাননগরের পুলিশের দাবি, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে ব্যবসা করার বৈধ অনুমতিই থাকে না। অথবা এক কাজের অনুমতি নিয়ে তার আড়াল করে চলে প্রতারণার কাজ। কখনও নামী মোবাইল পরিষেবাকারী সংস্থার টাওয়ার বসানোর নামে, কখনও স্বাস্থ্যবিমা করানোর নামে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে।
এ সব নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের মধ্যেই। তাঁদের মতে প্রশাসনের উচিত কারা শিল্পতালুকে অফিস চালাচ্ছেন, সেই সব অফিসে কী কাজ হচ্ছে, ক’ জনের ব্যবসা করার অনুমতি রয়েছে— সে সবের উপরে নজরদারি চালানো। তাঁরা মনে করেন, পুলিশ বাইরে থেকে নজরদারি চালালেও অফিসগুলির ভিতরে নজর রাখতে হবে নবদিগন্তকেই। এ ভাবে প্রতারণার ঘটনা ঘটতে থাকলে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক বাজারে রাজ্যের গর্বের মুখ শিল্পতালুক পাঁচ নম্বর সেক্টরের ভাবমূর্তি খারাপ হতে বাধ্য। এমনকি বিদেশ থেকে আসা কাজের পরিমাণও তাতে কমার আশঙ্কা থাকছে।
বিধাননগর পুলিশের এক কর্তার দাবি, পুলিশ নজরদারি চালায় বলেই একাধিক প্রতারণা চক্রকে ধরা সম্ভব হয়েছে।
পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ জানান, অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এ বার সেই সব নথিও খতিয়ে দেখা হবে। ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার সময়ে তথ্য অনুযায়ী সংস্থাগুলি কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।