প্রতীকী ছবি।
অ্যাসিডে দগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় তৈরি হয়েছে রহস্য। বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। মৃতার ছেলে দাবি করেছেন, আর্থিক অনটনের মধ্যে কোনও মতে সংসার চলছিল। অবসাদেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁর মা। পুলিশ অবশ্য দেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। শুক্রবারই ময়না-তদন্ত হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানায়, বছর একাত্তরের ওই বৃদ্ধার নাম স্বপ্না ভৌমিক। তিনি বড়িশার ভুবনমোহন রায় রোডের বাসিন্দা ছিলেন। স্বামীহীনা ওই মহিলা তাঁর ৫১ বছরের ছেলে রবীন্দ্রনাথ ও বছর চুয়াল্লিশের মেয়ে রুমাকে নিয়ে একটি বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকতেন। ছেলে ও মেয়ে কেউই বিয়ে করেননি। বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে হরিদেবপুর থানায় খবর যায়, এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। অ্যাসিডে দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে সকালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিছু ক্ষণ পরেই মৃত্যু হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ ওই বৃদ্ধার প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে রবীন্দ্রনাথের চিৎকারে প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙে। লোকজন ছুটে এসে দেখেন, বৃদ্ধা মাটিতে ছটফট করছেন। পাশে অ্যাসিডের বোতল। শুক্রবার বৃদ্ধার ছেলে পুলিশের কাছে দাবি করেন, তিনি মায়ের চিৎকারে উঠে দেখেন, মেঝেয় ছটফট করছেন তিনি। কিন্তু ভোরে ঘটনা ঘটলেও বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে সকাল সাড়ে ৮টা বেজে গেল কেন? স্পষ্ট উত্তর পায়নি পুলিশ।
তদন্তকারীদের রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকানে কাজ করেন তিনি। অতিমারির জেরে কাজের নিশ্চয়তা নেই। মাঝেমধ্যেই বসিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বোন কোনও কাজ করেন না। গত দেড় বছর ধরে মায়ের পেনশনেই সংসার চলছিল তাঁদের। রবীন্দ্রনাথের দাবি, এ নিয়ে অবসাদে ভুগছিলেন স্বপ্নাদেবী। তা থেকেই এমন কাণ্ড। মা-ছেলের মধ্যে কোনও ঝগড়া শুনেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার কথা কেন পুলিশে জানানো হল না, সেই প্রশ্নেরও উত্তর খোঁজা হচ্ছে। স্বপ্নাদেবীর দুই ছেলে-মেয়ের এ দিন শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। ঘর থেকে অ্যাসিডের বোতলের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা।